সাইরাস মিস্ত্রি
এনসিএলটির আপিল আদায়তের (এনসিএলএটি) রায় গিয়েছে তাঁর পক্ষে। সুপ্রিম কোর্টের রায় কী হবে, তা বলবে সময়ই। কিন্তু তার আগেই রবিবার টাটা সন্সের অপসারিত চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি জানিয়ে দিলেন, ওই পদে ফেরার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তাঁর। তবে ফিরতে চান টাটা গোষ্ঠীর মূল সংস্থাটির পর্ষদের সদস্য হিসেবে।
ইতিমধ্যেই গত ১৮ ডিসেম্বরে দেওয়া এনসিএলএটির রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে টাটা সন্স, টাটা ট্রাস্ট, টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থা। যার দ্রুত শুনানির জন্য সোমবার আর্জি জানানো হতে পারে। টাটা সন্সের অভিযোগ, এই রায়ে কর্পোরেট স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতে গিয়েছেন খোদ রতন টাটাও। পালোনজি মিস্ত্রির ছেলের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ ক্ষমতা ‘কুক্ষিগত’ করার। সেই আর্জির পরে রবিবার প্রথম মুখ খুললেন সাইরাস। কটাক্ষ করলেন, গত তিন বছর ধরে টাটা গোষ্ঠীর করা নানা পদক্ষেপকে। তোপ দাগলেন রতন টাটার বিরুদ্ধেও।
বিবৃতিতে মিস্ত্রি জানিয়েছেন, এনসিএলএটির রায়ে স্বস্তি পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু এটা কোনও পদ বা ক্ষমতার বিষয় নয়। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদে আর ফিরতে চান না তিনি। যোগ দিতে চান না টিসিএস, টাটা টেলি সার্ভিসেস বা টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ়ের মতো টাটা গোষ্ঠীর কোনও সংস্থার পরিচালন পর্ষদে, দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজেও। তবে টাটা গোষ্ঠীর মূল সংস্থায় ডিরেক্টর পদে ফিরতে চান। লক্ষ্য, যাতে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করা। সাইরাসের এই বিবৃতি নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি টাটা সন্স।
মিস্ত্রি বলেছেন, এই লড়াই কখনওই তাঁর একার জন্য ছিল না। বরং সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থের কথা ভেবেই বরাবর পদক্ষেপ করেছেন তিনি। টাটা সন্সে তাঁদের ১৮.৩৭% অংশীদারি রয়েছে। তাই দীর্ঘ মেয়াদে যাতে গোষ্ঠী ভাল ফল করে, সেটাই তাঁর লক্ষ্য ছিল। যে কারণে তিনি চান টাটা গোষ্ঠীতে সংস্থা পরিচালনার উচ্চ মান বজায় থাকুক। মিস্ত্রির দাবি, বাকি সব কিছুর থেকে টাটা গোষ্ঠীর স্বার্থই সব চেয়ে বড়।
সেই সঙ্গে রতন টাটাকে তোপ দেগে বলেছেন, যে ভাবে টাটা রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, তা এটাই প্রমাণ করে যে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের উপরে সংখ্যাগুরু শেয়ারহোল্ডারদের ছড়ি ঘোরানোকেই কর্পোরেট গণতন্ত্র বলে মনে করা হয়। মিস্ত্রির দাবি, যে আদর্শের উপরে ভিত্তি করে টাটা গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল, তাতে সব শেয়ারহোল্ডারদের কথা মাথায় রাখা হয়েছিল। কাজ করা হত সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে মিলে। টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে শাপুরজি-পালোনজি গোষ্ঠীর সম্পর্কও পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছিল। তাই কর্পোরেট গণতন্ত্রের জন্য সকলের কথাই মাথায় রেখে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করা জরুরি।