দেশে জলের সঙ্কট সম্পর্কে নীতি আয়োগ সতর্ক করেছে আগেই। এ বার ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের (ডব্লিউডব্লিউএফ) এক রিপোর্টে বলা হল, এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ব্যাঙ্কের খাতাতেও। বাড়তে পারে অনুৎপাদক সম্পদ।
ভারতের ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ মোট ঋণের ১০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সমস্যা এতটাই যে, ২১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে ১১টির উপর ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে বিধির কড়াকড়ি চাপিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই প্রেক্ষিতেই ডব্লিউডব্লিউএফের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত ক্ষেত্রে জলের সঙ্কট রয়েছে, অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে সেখানেই। তা হলে ব্যাঙ্কগুলির নগদের সমস্যাও আরও এক ধাপ বাড়তে পারে। এই অবস্থায় জলসম্পদের ঠিক মতো বণ্টন এবং ব্যবহারের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে।
ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের (আইবিএ) সঙ্গে যৌথ ভাবে রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে ডব্লিউডব্লিউএফ। সেখানে বলা হয়েছে, ব্যাঙ্কের দেওয়া মোট ঋণের অন্তত ৪০% বণ্টন করা রয়েছে এমন সমস্ত ক্ষেত্রে যেখানে জলের সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ। আরও নির্দিষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, যে দু’টি ক্ষেত্রে ভারতের ব্যাঙ্কগুলি সব থেকে বেশি ঋণ দেয়, তা হল বিদ্যুৎ এবং কৃষি। সেখানেও জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জলসঙ্কট তৈরি হওয়ার অর্থ উৎপাদন ব্যাহত হওয়া। আর তা হলে প্রভাব পড়বে ঋণদাতাদের অনুৎপাদক সম্পদে। পাশাপাশি নীতি আয়োগের সতর্কবাণী উল্লেখ করে রিপোর্টে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই মুহূর্তে দেশে জলের সঙ্কট পৌঁছেছে উদ্বেগজনক জায়গায়।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, বাস্তবেই বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির অনাদায়ি ঋণের অঙ্ক এখন বিপুল। দেউলিয়া বিধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তাদের আরও সময় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সংস্থাগুলি। আবার রাজ্যগুলি যে ভাবে কৃষি ঋণ মকুবের পথে হাঁটছে, তারও প্রভাব পড়বে রাজকোষে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধাক্কাটা সামাল দিতে হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকেই। অতএব বিদ্যুৎ ও কৃষি ক্ষেত্রে জলের অভাব বাড়লে এবং উৎপাদনে তার বিরূপ প্রভাব পড়লে চাপ আরও বাড়তে পারে ব্যাঙ্কগুলির উপর।