কেন্দ্রের থেকে মূলধন পেতে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে ব্যাঙ্ককে। নইলে মিলবে না টাকা। ব্যাঙ্কগুলিকে স্পষ্ট ভাবে এই বার্তা দিতে ‘ইন্দ্রধনুষ’ প্রকল্পের শেষ ২৫% অর্থ আটকে দিল কেন্দ্র। যে-সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক-কে এই প্রকল্পে কেন্দ্র মূলধন বাবদ ওই টাকা বরাদ্দ করেছে, তারা কেউই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ব্যবসার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। সেই কারণেই ওই টাকা আটকানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
এ দিকে অনুৎপাদক সম্পদ বাড়ায় ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ‘প্রম্পট কারেকটিভ অ্যাকশন’ (পিএসি) পরিকল্পনা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক দু’টি আপাতত নতুন ঋণ দিতে পারবে না। ডিভিডেন্ড বণ্টন-সহ আরও কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়ল তারা।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা করতে ২০১৫-’১৬ সালে আনা ইন্দ্রধনুষ প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ থেকে তিন বছর ধরে ব্যাঙ্কগুলিকে মোট ৭০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে শর্ত হল, ওই টাকা পেতে ব্যাঙ্কগুলিকে ব্যবসা ঘুরিয়ে দাঁড় করানোয় উন্নতির প্রমাণ দিতে হবে। ইতিমধ্যেই প্রকল্পের ৭৫% টাকা ১৩টি ব্যাঙ্ককে দিয়েও দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তারা কেউই ব্যবসার হাল ফেরাতে পারেনি বলে অভিযোগ।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসেবে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ ৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যার জেরে টান পড়ছে মূলধনে। এ কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্র সম্প্রতি তাদের ফের মূলধন জোগাতে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে। যার মাধ্যমে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন জোগানো হবে। এর ১.৩৫ লক্ষ কোটির ব্যবস্থা করা হবে বন্ড ছেড়ে। বাকি টাকার সংস্থান হবে বাজেট বরাদ্দ থেকে।
তবে যে-সব ব্যাঙ্ক ‘যোগ্য’, শুধু তারাই পাবে ওই টাকা। এ ব্যাপারে যে তারা কঠোর মনোভাব নিয়ে চলবে, ইন্দ্রধনুষ প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়ার মাধ্যমে সেই বার্তাই কেন্দ্র দিল বলে মনে করছেন ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞরা।
পিএসি পরিকল্পনাও চালু করেছে কেন্দ্র। যে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ওই সম্পদ উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গিয়েছে, সমস্যা রয়েছে মূলধনের, সম্পদ থেকে আয়ের পরিমাণও যথেষ্ট নয়, সেই সব ব্যাঙ্কেই এটি চালু হয়েছে। ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের আগে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক ওই তকমা পেয়েছে।