ফাইল চিত্র।
ব্যস্ত রুটগুলিতে বেসরকারি উদ্যোগে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা থেকে আপাতত সরে আসছে রেল। রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সম্প্রতি জানান, যথেষ্ট সংখ্যক সংস্থা আগ্রহ না দেখানোর জন্যই ওই উদ্যোগ মুলতুবি রাখা হচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে বিমানের ‘বিজ়নেস ক্লাস’-এর ধাঁচে উন্নত পরিষেবা দিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে ট্রেন চালুর কথা ভাবা হয়েছিল। বেসরকারি ট্রেনের মান ও পরিষেবার ধারণা তৈরি করতে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশনের (আইআরসিটিসি) মাধ্যমে একাধিক তেজস এক্সপ্রেস চালানো শুরু হয়। ‘চেয়ার-কার’ শ্রেণির ওই ট্রেনগুলিতে সময়ানুবর্তীতা নিশ্চিত করতে ট্রেন পৌঁছতে দেরি হলে যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়। এক ঘণ্টা দেরি হলে ১০০ টাকা, দু’ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি দেরি হলে ২৫০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। রাখা হয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।
গোড়ায় বেশ কয়েকটি রুটে ওই ট্রেন চললেও এখন শুধু মুম্বই-আমদাবাদ ও নয়াদিল্লি-লখনউ রুটে তা চলছে। প্রথম দিকে এই পরিষেবা লাভের মুখ দেখলেও গত দু’বছরে এই প্রকল্পে আইআরসিটিসির ৫৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ২০২১-২২ সালে লোকসানের বহর প্রায় ২৪ কোটি টাকা। তার আগের বছরে ৩৪ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। একমাত্র ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে নয়াদিল্লি-লখনউ তেজস এক্সপ্রেস ২.৩ কোটি টাকা মুনাফা করে। কিন্তু সার্বিক ক্ষতি বৃদ্ধির আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চালু রুট দু’টিতেও ট্রেন পরিষেবা কাটছাঁট করা হয়েছে।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য যে সব শর্ত রাখা হয়েছিল, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। ফলে একাধিক সংস্থাকে নিয়ে রেল-কর্তারা বৈঠক করলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া মেলেনি। আইআরসিটিসি এবং অন্য একটি বেসরকারি সংস্থা ছাড়া কেউই আগ্রহ দেখায়নি। সে কারণেই প্রকল্পটি মুলতুবি রাখা হচ্ছে। আপাতত বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো আধুনিক ট্রেন-সেট তৈরি করার পাশাপাশি রেলওয়ে ট্র্যাকের মান উন্নত করে ট্রেন সফরের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূল করার চেষ্টা চালাচ্ছে রেল। যাতে ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ টানার জমি তৈরি করা যায়।