অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।—ছবি রয়টার্স।
সরকার পুঁজি জোগানোর ব্যবস্থা করতে বিশেষ প্রকল্প আনলেও, অনেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থার ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব খারিজ করছে বা তাতে বিভিন্ন শর্ত বেঁধে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এই অভিযোগও পেয়েছেন, কিছু ব্যাঙ্ক সংশ্লিষ্ট ব্যবসার আগামী তিন বছর কত আয় ও মুনাফা হতে পারে খতিয়ে দেখে, তবেই তা মঞ্জুর করছে। এই অবস্থায় সম্প্রতি ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য আনা ৩ লক্ষ কোটি টাকার সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ প্রকল্পের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে পুঁজি বণ্টনে আরও গতি আনার নির্দেশ দিলেন নির্মলা। ওই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত কত ঋণ বিলি হয়েছে, মঙ্গলবার তারই পর্যালোচনায় সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রধানদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে বসেন তিনি।
আরএসএস অনুমোদিত বণিক সংগঠনের অভিযোগ ছিল, বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি ছোট শিল্পকে বিনা বন্ধকে ধার দিতে গড়িমসি করছে। যা শুনে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই ছোট শিল্পকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্ধকহীন ধার দিতে চাইছে না বা তা নিয়ে টালবাহানা করছে আগামী দিনে টাকা ফেরত না-পাওয়ার আশঙ্কায়। ফলে বেসরকারিরা তো দ্বিধাগ্রস্ত হবেই। অথচ সেই নোটবন্দি থেকে শুরু করে তড়িঘড়ি জিএসটি চালু, অর্থনীতির ঝিমুনি, চাহিদায় ধাক্কা, করোনা ও লকডাউনে থমকে যাওয়া ব্যবসা— একের পর এক ঘটনায় সব থেকে রক্তাক্ত হচ্ছে ছোট সংস্থাগুলি।
যদিও পরে নির্মলা নিজেই টুইট করে বলেন, ‘‘এমারজেন্সি ক্রেডিট লাইন গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ৮ জুন পর্যন্ত ১২টি রাজ্যে ছোট শিল্পের হাবের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ১১০৯.০৩ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করেছে। যেখানে ১০০% সরকারি গ্যারান্টির সুবিধা আছে।’’ এই ঋণ বণ্টনের তালিকায় এ রাজ্যে দুর্গাপুরের ৪৬২৭টি অ্যাকাউন্টও রয়েছে।
কেন্দ্রীয় আর্থিক পরিষেবা দফতরের দাবি, ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলির যোগ্যতা বিচার করে ঋণ মঞ্জুর করাই এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পাখির চোখ। আর সংশ্লিষ্ট শিল্পের একাংশ বলছেন, ওই যোগ্যতাতেই আসল ‘গল্প’ লুকিয়ে। কারণ, যোগ্যতা না-থাকার অজুহাত দেখিয়েই ঋণের আর্জি খারিজ করা হচ্ছে বড় অংশের। ঠিক যে ভাবে মুদ্রা ঋণ প্রকল্পে নতুন ব্যবসা চালুর জন্য উদ্যোগপতিরা ঋণ চাইলে, ব্যবসার সম্পদ আছে কি না, জানতে চাওয়া হচ্ছে। উত্তর ‘না’ হলে তা দেওয়া হচ্ছে না।