ফাইল চিত্র।
অর্থনীতিকে করোনার ধাক্কা থেকে বাঁচাতে যে ত্রাণ প্রকল্প কেন্দ্র চালু করেছে, তা তাড়াহুড়ো করে বন্ধ করা হবে না বলে স্পষ্ট করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সেই কথা মাথায় রেখেই বাজেটে মূলধনী খাতে ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৩৪%। চালু করা হয়েছে ন্যাশনাল মনিটাইজ়েশন পাইপলাইন, গতিশক্তির মতো প্রকল্প। যাতে আটকে থাকা টাকা হাতে আসে এবং তা দেশের কাজে লাগানো যায়। সেই সঙ্গে সারা বিশ্বে করোনার প্রতিষেধক তৈরির কাঁচামাল যাতে সহজে সরবরাহ করা যায়, সে জন্য জোগান শৃঙ্খল ঠিক থাকা জরুরি বলেও জানান তিনি।
এ দিকে, লগ্নিতে উদারীকরণ এবং কাঠামোগত সংস্কারের হাত ধরে বিশ্বের জোগান শৃঙ্খলে ভারত আরও বেশি করে জায়গা করে নিতে পারে বলে মনে করে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। তাদের বক্তব্য, অতিমারি পরবর্তী পৃথিবীতে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তা সাহায্য করবে। আইএমএফের অন্যতম কর্তা এবং ভারতের প্রাক্তন মিশন চিফ অ্যালফ্রেড শ্চিপকির মতে, করোনার মধ্যেও সব চেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানতে সক্ষম হয়েছে ভারত। আর তা হয়েছে কৃষি, প্রতিরক্ষা, টেলিযোগাযোগ, পরিষেবা এবং বিমার মতো ক্ষেত্রে সংস্কারে ভর করে। এ বার সেই পদক্ষেপই করতে হবে ওষুধ, ডিজিটাল মিডিয়া, বায়োটেকনোলজির মতো ক্ষেত্রে। সেই সঙ্গে শ্রম ও ভূমি সংস্কার, সংগঠিত ক্ষেত্রের পরিসর বাড়ানো, আইন সংস্কার, নীতির কাঠামো তৈরি, পরিচালনায় জোর দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর মার্চে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে একাধিক দফায় ত্রাণ প্রকল্প এনেছিল মোদী সরকার। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে, সেই ত্রাণের বেশিরভাগই মূলত ঋণের উপরে ভিত্তি করে আনা। পাশাপাশি, যে সমস্ত সংস্কারের কথা সেখানে বলা হয়েছে, তার সুফল ফলতেও সময় লাগবে। নির্মলার মতে, আগামীর কথা ভেবেই ত্রাণ দ্রুত বন্ধ করা উচিত নয়। বরং অর্থনীতিতে গতি আনতে জোর দিতে হবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ায়। প্রতিষেধক উৎপাদন আরও দেশে ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে বাজারে নগদের জোগান ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, না-হলে মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দিতে পারে।