ফাইল চিত্র
বিশ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের পরেও চলতি অর্থবর্ষে অর্থনীতির বহর কমবে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার পরেই অবস্থা সামলাতে ফের মাঠে নামতে হল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য ভবিষ্যতে সরকার আরও পদক্ষেপ ঘোষণা করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন তিনি। তবে তা করোনা-সঙ্কটের ব্যাপ্তির উপরে নির্ভর করছে বলে অর্থমন্ত্রীর যুক্তি। নির্মলা বলেন, ‘‘আমি একেবারেই দরজা বন্ধ করছি না। শিল্প মহলের প্রতিক্রিয়া জানার কাজ চলবে। যে সব ঘোষণা হয়েছে, তা রূপায়ণ হবে। পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঋণনীতিতে শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন, বাজারে চাহিদা ভেঙে পড়েছে। ফলে এ বছরে বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক হবে। কেন্দ্রের প্যাকেজ ঘোষণার পরে বিরোধী ও অর্থনীতিবিদেরা ঠিক এই প্রশ্নই তুলে বলেছিলেন, সরকার রাজকোষ থেকে বিশেষ খরচ করছে না। ব্যাঙ্কের থেকে ঋণের বন্দোবস্ত করছে। কিন্তু তাতে চাহিদা বাড়বে না।
আজ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘গভর্নরই বলছেন, চাহিদায় ধস নেমেছে। ২০২০-২১ সালের বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক হবে। তা হলে তিনি কেন নগদের জোগান বাড়াচ্ছেন? বরং স্পষ্ট করে সরকারকে তার দায়িত্ব পালন করতে বলুন। বলুন রাজকোষ থেকে খরচ বাড়াতে।’’
প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছিল, ত্রাণ প্রকল্পের পরিমাণ জিডিপি-র ১০%। কিন্তু চিদম্বরমের মতে, তা মাত্র ১%। কারণ, এর বেশি অর্থ রাজকোষ থেকে খরচ হচ্ছে না। আজ নির্মলার যুক্তি, ‘‘অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করে দেখেছি। প্রত্যেকেরই রাজকোষ থেকে কিছু খরচ হচ্ছে। কিন্তু ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণের জোগানও রয়েছে। আমরা অনেক অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। বাজারে নগদ বাড়াতে পদক্ষেপ করেছি। তাতেও মানুষের হাতে টাকা আসবে, চাহিদা বাড়বে।’’
কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কই যে উল্টো কথা বলছে! অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, অতিমারির প্রকোপ কবে শেষ হবে, তা বলা সম্ভব নয়। তাই বৃদ্ধির হার কী দাঁড়াবে, তা বলার মতো পরিসংখ্যান এখনই নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মাথায় রয়েছে যে, বৃদ্ধি ঋণাত্মক হলে পদক্ষেপ করতে হতে পারে।’’