নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
সাধারণ লগ্নিকারীদের মধ্যে যে ভাবে শেয়ার বাজারের ফিউচার অ্যান্ড অপশন ক্ষেত্রে (এফঅ্যান্ডও) আগাম লেনদেনের প্রবণতা বাড়ছে, তা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ বার লগ্নি বিশেষজ্ঞেরাও একই বার্তা দিলেন। তাঁদের বক্তব্য, কম সময়ে বড় অঙ্কের মুনাফার সুযোগ থাকায় এর আকর্ষণ দিনের পর দিন বাড়ছে। কিন্তু এই লগ্নি ক্ষেত্র অনুমানভিত্তিক। তাই পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণ করে পা রাখা উচিত লগ্নিকারীদের। বুঝে নেওয়া উচিত নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতাও। না হলে বড়সড় লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে। পরিসংখ্যান তেমনটাই বলছে।
সম্প্রতি এক কর্মসূচিতে নির্মলা জানান, এফঅ্যান্ডও-র বাজারে সাধারণ লগ্নিকারীদের পুঁজি কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ঢুকছে। এতে যে শুধু পারিবারিক সঞ্চয় ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে এমন নয়, বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে মূলধনী বাজারেও। কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন বলেছিলেন, এফঅ্যান্ডও-তে যাতে একলপ্তে বেশি পুঁজি ঢালতে না হয়, তার জন্য ছোট অঙ্কের লেনদেন চালু করার কথা ভাবা যেতে পারে। লগ্নি পরামর্শদাতা সংস্থা দ্য ইনফিনিটি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ডিরেক্টর বিনায়ক মেহতা জানান, ২০১৯ সালের মার্চে এফঅ্যান্ডও ক্ষেত্রে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ২১৭ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের মার্চে তা ৮৭৪০ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে। স্পষ্টতই, অতিমারির পরে সাধারণ লগ্নিকারীদের মধ্যে অল্প সময়ে বেশি মুনাফা হাতে পাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এফঅ্যান্ডও-তে পুঁজি ঢেলে সাধারণ লগ্নিকারীদের ৮৯ শতাংশই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এক এক জনের গড় ক্ষতি ১.১ লক্ষ টাকা।
শেয়ার লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম ফায়ার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও তেজস খোড়ে বলেন, ‘‘বিকল্প লগ্নির ক্ষেত্র হিসেবে এফঅ্যান্ডও ভাল। কিন্তু এখানে লগ্নির অঙ্ক বড় মাপের হওয়ায় ঝুঁকিও বেশি। ফলে পুঁজি ঢালার আগে সাধারণ লগ্নিকারীদের ভাল ভাবে জেনে-বুঝে নেওয়া উচিত।’’ ওই সব লগ্নিকারীর উদ্দেশে আনন্দ রাঠী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রদীপ গুপ্তের বার্তা, ‘‘এফঅ্যান্ডও-তে ন্যূনতম যে পুঁজি প্রয়োজন হয়, শুধু সেটুকু দিয়ে শুরু করা উচিত।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এখানে লগ্নি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই। সেই সঙ্গে ন্যূনতম লগ্নির অঙ্কও অনেকটা বেশি।