—প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে ভোগ্যপণ্যের স্টক দুর্দান্ত ফল করবে বলে আশাবাদী ছিলেন লগ্নিকারীরা। কিন্তু, বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ছবি। চলতি বছরের অক্টোবরে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে দ্রুত চলমান ভোগ্যপণ্যের (ফাস্ট মুভিং কনজ়িউমার গুডস্ বা এফএমসিজি) শেয়ার। যাকে সাধারণভাবে প্যাকেটজাত সামগ্রী বলে চিহ্নিত করা হয়। এগুলির বিক্রি কমায় তার প্রভাব স্টকের সূচকে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে সার্বিকভাবে এফএমসিজি সংস্থাগুলি খারাপ ফল করে। এই ক্যাটেগরির শীর্ষ স্থানীয় বেশ কয়েকটি কোম্পানি জানিয়েছিল, প্রত্যাশার চেয়ে খারাপ ব্যবসা করেছেন তারা। সেই রিপোর্ট বিনিয়োগকারীদের হতাশা বাড়িয়েছিল। ফলে অক্টোবরে লগ্নিকারীদের একাংশ স্টক বিক্রি করে দেন। তখনই এর সূচক নামতে শুরু করে করে।
শেয়ার বাজার সূত্রে খবর, এ বছরের অক্টোবরে এফএমসিজির সূচক ৯.৬ শতাংশ নেমেছে। যা রেকর্ড। গত ছ’বছরের মধ্যে এতোবড় পতন আর কখনই দেখা যায়নি। বর্তমানে এই ক্যাটেগরির সংস্থাগুলির শেয়ার সূচক ৫২ সপ্তাহের উচ্চতা থেকে ২২ শতাংশ নীচে চলে এসেছে। আগে যা ছিল ১৫ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি দর পড়েছে ‘টাটা কনজিউমার’-এর শেয়ারের।
সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভার এবং নেস্টলে ইন্ডিয়ার মতো শীর্ষ স্থানীয় ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির বিক্রি মারাত্মকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এই কোম্পানিগুলি গ্রামের তুলনায় শহর এলাকাতেই বেশি ভাল ব্যবসা করে থাকে। যা সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে চোখে পড়েনি। বিশেষজ্ঞদের দাবি, খাদ্যে মুদ্রাস্ফীতি হওয়ায় প্যাকেটজাত পণ্য কেনার ঝোঁক কমেছে।
আইটিসির মতো কোম্পানি আবার জানিয়েছে, বিক্রি কমার পাশাপাশি কাঁচামালের খরচ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে এর জন্য ১৩ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা খরচ করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। অর্থাৎ ৪৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচামালের দাম। গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে এর জন্য ১১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা খরচ করেছিল আইটিসি। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির জেরে অপারেটিং লাভের অঙ্ক ৩৩০ বেসিস পয়েন্ট কমেছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
অন্য দিকে সার্বিকভাবে শেয়ার বাজার অক্টোবরে গত চার বছরের নিরিখে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। এখনও পর্যন্ত সেনসেক্স এবং নিফটির সূচক পড়েছে ছয় এবং ৬.০১ শতাংশ। ২০২০ সালের মার্চে কোভিড অতিমারী শুরু হওয়ার পর এতো বড় পতন আর দেখা যায়নি।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার অনলাইন কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)