—প্রতীকী ছবি
মাত্র ১২ দিনে হাজার পয়েন্ট ঝুলিতে পুড়ল সেনসেক্স। ফের ছুঁল নতুন উচ্চতা! গত ৯ ডিসেম্বর প্রথমবার ৪৬ হাজারের ঘরে থিতু হয়েছিল বিএসই সূচক। তার পরে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে সোমবার তা থামল ৪৭ হাজারের ঘরে। মাত্র ১২টি কাজের দিনে পার করল এই দূরত্ব। ফলে সংশ্লিষ্ট মহলে ফের জোর পেল কয়েকটি প্রশ্ন। চলতি অর্থবর্ষেই কি ৫০ হাজারের মাইলফলক ছোঁবে সূচকটি? নাকি উঁচু বাজারে বড় সংশোধন অবশ্যম্ভাবী?
এ দিন ৩৮০.২১ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭,৩৫৩.৭৫ অঙ্কে দিন শেষ করেছে সেনসেক্স। নিফ্টি ১২৩.৯৫ পয়েন্ট বেড়ে থেমেছে রেকর্ড ১৩,৮৭৩.২০ অঙ্কে। এ নিয়ে টানা চার দিন বাড়ল বাজার। এই ক’দিনে লগ্নিকারীদের সম্পদ বেড়েছে ৮.২২ লক্ষ কোটি টাকা।
বাজার বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, প্রথমে মনে করা হয়েছিল জানুয়ারিতে জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরেই ঘোষিত হবে নতুন ত্রাণ প্রকল্প। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত তাতে সম্মতি দেবেন না। কিন্তু সেই অনমনীয়তা কাটিয়ে ৯০,০০০ কোটি ডলারের প্যাকেজে সই করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। এই জোড়া কারণে দিনের শুরু থেকেই বিশ্ব বাজার বাড়ছিল। তার প্রভাব পড়ে ভারতেও।
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে কাজে কমেছে অফিস লিজ়
অনেকে বলছেন, ভারতে করোনার টিকা প্রয়োগের সম্ভাবনাও সেনসেক্স এবং নিফ্টিকে বাড়তি গতি দিয়েছে। লকডাউন শিথিলের পরে অর্থনীতি কতটা এগোতে পেরেছে, তাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন লগ্নিকারীরা। করোনার আগের অবস্থাকে নয়। একই ভাবে মূল্যায়ন সংস্থাগুলিও চলতি অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতির সঙ্কোচনের পূর্বাভাস কমিয়েছে। বলেছে, তৃতীয় ও চতুর্থ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির মুখ দেখতে পারে দেশ। আগের আশঙ্কার তুলনায় ভাল ফল করবে সংস্থাগুলিও। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিরও ধারণা, অন্য দেশের চেয়ে ভারতের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। বস্তুত, এ দিনও বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এখানে ১৫৮৮.৯৩ কোটি টাকা ঢেলেছে।
আরও পড়ুন: টিভি, ফ্রিজ়ের দাম বাড়তে চলেছে নতুন বছরেই
দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর কথায়, ‘‘করোনার জেরে বড় ক্ষতি হয়েছিল ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের। তাদের জন্য কেন্দ্র যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছে তার সুফল মিলতে শুরু করেছে। সে কারণে শুরুতে সূচকের শেয়ারগুলির উপর ভর করে বাজার বাড়লেও এখন তা বাড়ছে সার্বিক ভাবে। ফলে ছোট ও মাঝারি মাপের মূলধনের সংস্থাগুলির সূচকও মাথাচাড়া দিচ্ছে।’’
তবে বাজারের এই রমরমার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য বিধান দুগার বলেন, ‘‘লগ্নিকারীদের একাংশ মনে করছেন, সূচক বুঝি এখন বাড়তেই থাকবে। কিন্তু উঁচু বাজারে বড় সংশোধনের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’