কাগজের উপরেই যদি ছেপে দেওয়া যায় সৌর-কোষ? কিংবা প্যাকেটজাত খাবারের গুণমান যাচাই করার জন্য বৈদ্যুতিন চিপই যদি ছাপা থাকে সেই প্যাকেটের উপরে? ‘ডিজিটাল’ প্রযুক্তির রমরমার জেরে কমছে প্রথাগত ছাপার ব্যবসা। তাই প্রযুক্তিকেই কাজে লাগিয়ে এ রকম নতুন ধরনের ছাপা এবং ‘প্যাকেজিং’ ব্যবসার সম্ভাবনার সূত্র খুঁজতে গবেষণা চালাচ্ছে জার্মানির শেমনিৎজ বিশ্ববিদ্যালয়। ছাপার আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার এমন নানা সূত্রের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা ও গবেষণার জন্য ভারতে এসডি অ্যালুমিনিয়াম সংস্থার পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরছে তারা।
এসডি অ্যালুমিনিয়াম-এর দাবি, ভারতে ছাপার ব্যবসা ক্ষেত্রটি কার্যত কোনও প্রযুক্তি নির্ভর নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষামূলক। আধুনিক প্রযুক্তির দিশা পেতে ও দক্ষ কর্মী গড়তে বছরখানেক আগে তারা শেমনিৎজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রাথমিক ভাবে ওষুধ ও খাবারের মোড়কের উপর ছাপার ক্ষেত্রই এর মূল লক্ষ্য। আধুনিক ছাপার প্রযুক্তি ও গবেষণা তুলে ধরতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, এসডি অ্যালুমিনিয়াম ও শেমনিৎজ বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ ভাবে সম্প্রতি যাদবপুরে এক আলোচনাচক্রেরও আয়োজন করেছিল।
শেমনিৎজ-এর ‘ইনস্টিটিউট ফর প্রিন্ট অ্যান্ড মিডিয়া টেকনোলজি-র ডিরেক্টর আর্ভেড হুবলার ছিলেন এই আলোচনাচক্রের মূল বক্তা। তাঁর মতে, ছাপার ক্ষেত্রেও আধুনিক প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। যেমন কাগজ বা প্যাকেটের উপর বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ ছাপার পরিকল্পনা চলছে।
আবার এই ধরনের প্রযুক্তি জাল পণ্য ধরতেও কাজে লাগতে পারে বলে দাবি এসডি অ্যালুমিনিয়ামের এমডি আশিস ভট্টাচার্যের। আশিসবাবু জানান, ওযুধ শিল্পে জাল মোড়কে জাল ওযুধ বিক্রির চল রয়েছে। কোনও ওষুধ জাল কি না, তা খতিয়ে দেখতে মোড়কের ছাপার ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে জাল ওযুধের মোড়কে ওই ছাপ থাকবে না। ফলে কোনটি জাল ওষুধ, তা ধরা সহজ হবে। এ নিয়ে গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি) শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রিন্টিং টেকনোলজির আধুনিক গবেষণার জন্য শেমনিৎজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করার ভাবনা রয়েছে তাঁদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের কাছে সেখানকার গবেষণা ও কাজের সুযোগ পৌঁছে দেওয়াই যার মূল লক্ষ্য।