ছবি: সংগৃহীত।
এক, দুই, তিন, চার ...৪৮।
এখনও পর্যন্ত ২০২১ সালে শেয়ার বাজারে আসা প্রথম শেয়ার (আইপিও)। যা শুধু মোদী সরকারের আমলে কোনও এক বছরে সর্বাধিকই নয়, ভারতের শেয়ার বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চও বটে। এর আগে এক মাত্র বিশ্ব মন্দার ঠিক আগে ২০০৭ সালে এক সঙ্গে বাজারে পা রাখতে দেখা গিয়েছিল প্রায় ১০০টি সংস্থাকে। তার পর থেকে গত ১৪ বছরে একাধিক সংস্থা বাজারে এলেও এ ভাবে একই বছরে এত সংখ্যায় আইপিও নথিভুক্ত হয়নি।
আর ঠিক এইখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, বাজার যত চড়ছে, ততই সংস্থাগুলি তার সুযোগ নিতে নতুন শেয়ার ইসু করছে। দেখা যাচ্ছে নামী সংস্থা যেমন বাজারে প্রথম পা রাখছে, তেমনই অনামী এবং লোকসানে চলা সংস্থাও আইপিও ছেড়ে মূলধন সংগ্রহের দৌড়ে নামছে। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই বিপুল চাহিদা দেখা যাচ্ছে তাদের শেয়ারের। আবেদন জমা পড়ছে কয়েকগুণ। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের ওই সব আইপিও-য় লগ্নি করার ক্ষেত্রে সাবধানে পা ফেলা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। পরামর্শ দিচ্ছেন বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার।
বস্তুত, বাজারে যে সমস্ত সংস্থা নথিভুক্ত হচ্ছে, তাদের সিংহভাগই স্টার্ট-আপ বা নতুন উদ্যোগ। দেখা যাচ্ছে, তাদের অনেকের ব্যবসা এখনও জমে ওঠেনি। অনেকে আবার এখনও দেখেনি লাভের মুখই। অথচ শুরুতেই শেয়ার বেচে বিপুল টাকা তুলছে তারা। দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর কথায়, “আগে নিয়ম ছিল, কোনও সংস্থা আইপিও আনতে চাইলে গত তিন বছর মুনাফা করার রেকর্ড থাকা চাই। এতে সংস্থার আর্থিক হাল কেমন, তার ধারণা মিলত। কিন্তু এখন সেই নিয়ম আর নেই। তাই কোন সংস্থা, বিশেষ করে স্টার্ট-আপগুলি কেমন ব্যবসা করবে, তার ধারণা করার মতো তথ্য পাওয়া কঠিন।’’
একই মতের শরিক শেয়ার বাজার নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা ভ্যালু রিসার্চের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ধীরেন্দ্র কুমারও। তিনি বলেন, ‘‘কিছুটা যেন উন্মত্ত হয়েই আইপিও-কে বেছে নিচ্ছেন মানুষ। অথচ প্রথম শেয়ার ছাড়ার আগে সংস্থা যে প্রসপেক্টাস (যেখানে সংস্থা ও শেয়ারে লগ্নির ঝুঁকি নিয়ে বিশদে লেখা থাকে) প্রকাশ করে, তা ভাল করে পড়েও দেখেন না তাঁরা। যেমন, একটি নামী স্টার্ট-আপ, যারা সম্প্রতি আইপিও ছেড়েছে, তারা প্রসপেক্টাসে পরিষ্কার লিখেছে যে, অদূর ভবিষ্যতে তাদের মুনাফা করার সম্ভাবনা কম। অথচ তারই শেয়ারে কয়েকগুণ আবেদন জমা পড়েছে।’’
এই পরিস্থিতিতে কয়েকটি বিষয় মনে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন ধীরেন্দ্র এবং আশিস। তার মধ্যে রয়েছে—
দেখতে হবে প্রোমোটারদের পরিচয়, বাজারে সংস্থার পণ্য বা পরিষেবার চাহিদা, ব্যবসার দক্ষতা এবং ঝুঁকির দিকগুলি।