ইউনিটেক পর্ষদ থেকে বরখাস্ত আট ডিরেক্টর

ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশকে এ দিনই চ্যালেঞ্জ জানায় ইউনিটেক। দাবি করে, গত ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ কার্যকর করা যাবে না তাদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

প্রায় ২০ হাজার ক্রেতা ও সংস্থায় ৫১ হাজার আমানতকারীর স্বার্থ বাঁচানোর লক্ষ্যে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালে (এনসিএলটি) ইউনিটেক হাতে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্র। অভিযোগ তুলেছিল, সংস্থাকে ভুল পথে পরিচালনা করা ও ডিরেক্টরদের বেআইনি ভাবে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যটিতে তহবিল সরানোর। সেই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার আবাসন সংস্থাটির আট জন ডিরেক্টরকে আপাতত বরখাস্ত করল এনসিএলটি। নির্দেশ দিল, ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ইউনিটেকের পর্ষদে ১০ জন নমিনি নিয়োগ করতে হবে কেন্দ্রকে। যাদের দেওয়া হবে দৈনন্দিন কাজ চালানোর ভার। ওই দিনই এন সি এল টি-তে মামলার পরের শুনানি।

Advertisement

ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশকে এ দিনই চ্যালেঞ্জ জানায় ইউনিটেক। দাবি করে, গত ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ কার্যকর করা যাবে না তাদের বিরুদ্ধে। যদিও নির্দেশ নিয়ে অনড় থেকে সংস্থার আবেদন খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। জানিয়েছে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য থাকবে কেন্দ্র মনোনীত ডিরেক্টররাও।

ইউনিটেকের অভিযোগ, তাদের সংস্থার শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ বিরোধী এ দিনের নির্দেশ। বিশেষ করে যেখানে সংস্থার আরও দুই ম্যানেজিং ডিরেক্টর এখন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। এবং বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্প সম্পূর্ণ করার জন্য টাকা জোগাড়ের লক্ষ্যে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালাচ্ছেন বাকিরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে টেলি শিল্পে পা রাখে ইউনিটেক। পরে টেলিনরকে ওই ব্যবসা বেচেও দেয়। কিন্তু টুজি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় গ্রেফতার হন সংস্থার কর্তা সঞ্জয় চন্দ্র। পরে অবশ্য জামিনও পান। এ দিন বরখাস্ত হওয়া ইউনিটেকের দুই ম্যানেজিং ডিরেক্টেরের মধ্যে একজন তিনিও। আট জনের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ও আর এক ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজয় চন্দ্রও।

সালতামামি

• ২০০৮: টেলি শিল্পে পা ইউনিটেকের

• ২০০৮: টেলিনরকে ওই ব্যবসা বিক্রি

• ২০১১: টুজি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার কর্তা সঞ্জয় চন্দ্র। পরে জামিন

• ২০১২: টেলি লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

• ২০১২: টেলি পরিষেবা থেকে বিদায়

• ২০১৩: সমস্যা শুরু নির্মাণ ব্যবসাতেও

• ২০১৬: সময়ে ফ্ল্যাট না-দেওয়ার অভিযোগ। ১৫ কোটি টাকা জমার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

• এপ্রিল, ২০১৭: প্রতারণার দায়ে ধৃত সঞ্জয় ও অজয় চন্দ্র

• ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭: বরখাস্ত ৮ ডিরেক্টর। কেন্দ্রকে ১০ সদস্য নিয়োগের নির্দেশ

কেন্দ্র এনসিএলটি-র কাছে আবেদনে বলেছিল, ইউনিটেকের যা অবস্থা, তাতে সংস্থাটি গুটোনোই উচিত। কিন্তু আবাসনের বহু ক্রেতা ও আমানতকারীরা প্রায় ৭২৩ কোটি টাকা পায় তাদের কাছে। সেই কারণেই সংস্থা পরিচালন পর্ষদ অধিগ্রহণের আবেদন সরকারের। ঠিক এক দশক আগে এ ভাবেই টাকা নয়ছয়ের কেলেঙ্কারি সামনে আসায় সত্যম কাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেছিল কেন্দ্র। হাতে নিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটিকে এবং পরে বিক্রি করে দিয়েছিল মহীন্দ্রাকে।

এ দিন এনসিএলটি-র নির্দেশ, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পর্ষদ থেকে আপাতত বরখাস্ত হওয়া ওই আট ডিরেক্টরকে ট্রাইব্যুনালের কাছে জবাব দাখিল করতে হবে। এবং তাঁরা নিজেদের ব্যক্তিগত বা সংস্থার কোনও সম্পত্তি বিক্রিও করতে পারবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement