নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
সরকারি ঋণপত্রে সাধারণ লগ্নিকারীর বিনিয়োগের রাস্তা খোলা এবং ব্যাঙ্কিং ও অন্যান্য আর্থিক পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের নালিশ শুনতে এক দেশ এক অম্বুডসম্যান— শুক্রবার এই দুই প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, নাগরিকদের প্রয়োজন মেটানো ও লগ্নিকারীদের আস্থা মজবুত করাই তাঁদের লক্ষ্য। সাত বছরে ডিজিটাল লেনদেনের ১৯ গুণ বৃদ্ধি বা ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা ব্যাঙ্কের দরজা খোলা রাখার ব্যবস্থা হওয়া নিয়ে প্রচারও করলেন। তবু বিতর্ক পিছু ছাড়ল না। বিশেষত দেশবাসীর ক্ষোভ প্রশমনের প্রশ্নে।
দেশের সব প্রান্ত থেকে আর্থিক পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের নালিশ শোনা ও তার প্রতিকার করতে জাতীয় অম্বুডসম্যান চালু হয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ছাতার তলায়। তারই উদ্বোধনে মোদী বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের সব থেকে বড় কষ্টিপাথর ক্ষোভ প্রতিকারের ব্যবস্থার শক্তি। সেই দিকেই লম্বা রাস্তা পাড়ি দেবে ইন্টিগ্রেটেড অম্বুডসম্যান।’’ তার পরেই ধেয়ে এসেছে কটাক্ষ, তা হলে তেল-গ্যাসের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ক্ষোভের কোনও প্রতিকার হল না কেন! সামান্য ক’টাকা উৎপাদন শুল্ক কমিয়েই দায় সেরেছে সরকার।
নতুন প্রকল্পে ব্যাঙ্কিং, এনবিএফসি এবং ডিজিটাল পেমেন্ট অম্বুডসম্যানকে এক ছাতার তলায় আনা হয়েছে। আরবিআইয়ের দাবি, এতে গ্রাহকের নালিশের দ্রুত সমাধান করা যাবে। অন্য প্রকল্পটিতে শীর্ষ ব্যাঙ্কে নিখরচার অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন সরকারি ঋণপত্রে লগ্নি করতে পারবেন মানুষ। ব্যাঙ্ক, বিমা, পেনশনের সুবিধা এর আগে গরিবের কাছে পৌঁছনো হয়নি বলে এ দিন পূর্বতন সরকারের সমালোচনাও করেন মোদী।
বস্তুত, এ দিনের অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি দানা বাঁধে আগেই। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মতো স্বশাসিত সংস্থার প্রকল্প কেন চালু হবে প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে? প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য রথীন রায় বৃহস্পতিবার টুইট করেন, ‘‘দৃশ্যত কেন্দ্রের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঐতিহ্য। তবে যখনই ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্রবিহীন কোনও আমলা এর শীর্ষ পদে এসেছেন, তখনই ব্যতিক্রম ঘটেছে।’’ এই মন্তব্যের লক্ষ্য আরবিআইয়ের বর্তমান গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। সম্প্রতি ওই পদে যাঁর কাজের মেয়াদ আরও লম্বা হয়েছে।