শুভারম্ভ: দীপাবলির সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে বিএসই-তে বিশেষ মুরত লেনদেন। ঘণ্টা বাজিয়ে সূচনা করেন অভিনেতা অজয় দেবগণ। ছবি: পিটিআই।
হিন্দু ক্যালেন্ডারের নতুন আর্থিক বছর, ২০৭৯ সম্বৎ শুরু হল সেনসেক্সের প্রায় ৫২৪ পয়েন্ট উত্থান দিয়ে। দীপাবলিতে তার সূচনা উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যে ৬টা ১৫ থেকে ৭টা ১৫ পর্যন্ত বিশেষ মুরত লেনদেন চলে। এই সময়ের মধ্যেই সূচক ফের পৌঁছেছে ৬০ হাজারের দোরগোড়ায়। থিতু হয়েছে ৫৯,৮৩১.৬৬ অঙ্কে। নিফ্টি ১৫৪.৪৫ উঠে বন্ধ হয়েছে ১৭,৭৩০.৭৫-এ। গত সম্বতে ৬০ হাজারের ঘরে ঢুকে থেমেছিল সেনসেক্স (৬০,০৬৭.৬২)। নিফ্টি থামে ১৮ হাজারের কাছে গিয়ে (১৭,৯১৬.৮০)।
গোটা বছরের জন্য সম্পদ এবং সমৃদ্ধি কামনায় লক্ষ্মী পুজোর পরে সীমিত সময়ের মুরত লেনদেন বাজার মহলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, গুজরাতি নববর্ষের প্রথম লেনদেনের দিন সেনসেক্সের উত্থান দেখে বাজারকে যে রকম উদ্বেগহীন মনে হচ্ছে, বাস্তবে তা তেমন নয়। বরং বছরভর সূচক কেমন থাকবে, সেই বিষয়ে সংশয়ে রয়েছে। ২০৭৮ সম্বৎ বহু ঝড়-ঝাপ্টায় কাটালেও বাজার তলিয়ে যায়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ২০৭৯-তে অভিঘাত কী হয়, তা সময় বলবে।
আগের সম্বতে বাজার অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ, তার জেরে চড়া মূল্যবৃদ্ধি, তাকে রুখতে আবার বাড়তে থাকা সুদ পরিস্থিতি ঘোরালো করেছে। এতে শিল্পের খরচ বৃদ্ধির সম্ভাবনা। আর আমেরিকায় সুদ বেড়ে বন্ডের বাজার চাঙ্গা হওয়ায় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারত থেকে লগ্নি তুলে নিয়েছে। যা টাকার দামকে টেনে নামিয়ে ডলারের দাম বাড়িয়েছে। সারা বিশ্ব এমনকি ভারতও সেই সব সঙ্কট থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি। তাই নতুন বছরে বাজার কেমন থাকবে, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত বিশেষজ্ঞেরা।
বিশেষজ্ঞ অজিত দে অবশ্য বলছেন, ভারতে সূচকের অবস্থা অন্য যে কোনও দেশের থেকে ভাল। বিদেশি লগ্নিকারীদের পক্ষে বেশি দিন মুখ ঘুরিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এখনও ভারতের বাজারে মোটা অঙ্কের শেয়ার কেনা বা বেচার খদ্দের সহজে মেলে।
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখের দাবি, অন্য ক্ষেত্রগুলি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় ভারতের বাজারে লগ্নি দ্রুত বেড়েছে। নগদ জোগান বাড়ায় উঠেছে শেয়ারের দামও। কিন্তু সংস্থাগুলির মুনাফা ও তার দামের সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য নেই। যা বড় ঝুঁকি। বিশেষত মূল্যবৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম মাথা না-নামালে বাজারের হাল কী দাঁড়াবে, তা বলা কঠিন বলে ধারণা অনেকেরই। তবে দীর্ঘ মেয়াদে মুনাফার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে প্রায় সকলেই একমত।