—প্রতীকী চিত্র।
প্রখর গ্রীষ্মে দেশের জলাধারগুলিতে জলের পরিমাণ তলানিতে ঠেকায় আশঙ্কা ছড়িয়েছিল। এ বার সেই জলসঙ্কট ভারতের অর্থনীতি তথা ক্রেডিট রেটিংয়ে (কোন দেশকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তার মূল্যায়ন) প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করল মুডি’জ়।
মঙ্গলবার এক রিপোর্টে মূল্যায়ন সংস্থাটির বক্তব্য, জলের পরিমাণ কমতে থাকলে কৃষি ও শিল্পে অসুবিধা হবে। সেটা হলে ফসল কম ফলবে, ধাক্কা খাবে তাপ বিদ্যুৎ-ইস্পাত ইত্যাদির উৎপাদন। ফলে বাড়বে জিনিসের দাম। সেই সমস্যা সামলাতে মানুষ কম খরচ করতে শুরু করলে কমবে আয়। তৈরি হবে বৈষম্য। যা সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। যে কারণে কোনও আঘাত মোকাবিলার ক্ষমতা কমবে দেশের। ধাক্কা খাবে ক্রেডিট রেটিং-ও।
এ বছর প্রবল তাপপ্রবাহের জেরে দিল্লির কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য অনেক জায়গাতেই তা ঘোরাফেরা করছে ৪০ ডিগ্রির উপরে। তাই বেড়েছে জলের চাহিদা। দিল্লি, বেঙ্গালুরুর মতো কিছু কিছু শহরে জলকষ্ট বাড়ছে। তার উপরে আবার সারা দেশেই বর্ষা দেরিতে এসেছে। ফলে জলাধারে জল কমেছে। এর জেরে ইতিমধ্যেই কৃষিকাজ ব্যাহত হয়েছে। বেড়েছে আনাজপাতির দাম। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামালেও, খাদ্যপণ্য যে চিন্তার কারণ তা বলছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও।
মুডি’জ়ের মতে, শিল্পের দিক থেকে ভারত বর্ধিষ্ণু দেশ। যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শহরের মাপ। কেন্দ্রের জল মন্ত্রকের তথ্যই জানাচ্ছে ২০৩১ সালে গিয়ে মাথাপিছু জলের পরিমাণ কমে দাঁড়াতে পারে ১৩৬৭ ঘন মিটার। এমনিতে ১৭০০-র নীচে থাকলেই জলকষ্ট বলা হয়, তা ১০০০ ঘন মিটারে নামলে তীব্র আকাল দেখা দিতে পারে। অথচ কোনও কোনও অঞ্চলে অতিবৃষ্টির জেরে চাষের ক্ষতিও হয়েছে গত কয়েক বছরে। ফলে এই পরিস্থিতিতে জল পরিকাঠামোর লগ্নি বাড়িয়ে তা পাকাপোক্ত করার দিকে মন দেওয়া জরুরি বলে জানাচ্ছে মূল্যায়ন সংস্থাটি। যা দীর্ঘ মেয়াদে জল সঙ্কট যুঝতে সাহায্য করবে।