—প্রতীকী ছবি।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিকে যথেষ্ট ইতিবাচক দেখাচ্ছে বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। শুক্রবার অর্থনীতি সংক্রান্ত মাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে তাদের দাবি, বেসরকারি সংস্থার লগ্নি এবং সাধারণ মানুষের কেনাকাটা বৃদ্ধির পাশাপাশি, মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নমুখী প্রবণতা স্পষ্ট। যদিও কেন্দ্রের এই দাবির সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতার ফারাক রয়েছে বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিনটি ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশের উপরে। তার উপরে ভিত্তি করে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (এনএসও) গোটা অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭.৩% থেকে বাড়িয়ে ৭.৬% করেছে। বিভিন্ন মূল্যায়ন ও ব্রোকারেজ সংস্থা আবার বলছে, এই হার ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্টে দাবি, পরিকাঠামোয় সরকারের ধারাবাহিক মূলধনী খরচই এখন টেনে আনছে বেসরকারি লগ্নিকে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে শহর এবং গ্রামের মধ্যে খরচ বৃদ্ধির ফারাক কমছে। খাদ্য এবং জ্বালানির বাদে বাকি মূল্যবৃদ্ধির (কোর ইনফ্লেশন) হার ইতিমধ্যেই নিম্নমুখী। গ্রীষ্মকাল এলে খাবারদাবারের দামও কিছুটা আয়ত্তে আসবে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। যদিও অশোধিত তেলের দাম ফের মাথা তোলার আশঙ্কা এবং বিশ্ব বাণিজ্যের সামনে তৈরি হওয়া বাধার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে প্যারিস স্কুল অব ইকনমিক্সের ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাবের সাম্প্রতিকতম রিপোর্টের কথা। যেখানে দাবি করা হয়েছে, মোদী সরকারের ন’বছরে দেশে ধনী-দরিদ্রের অসাম্য অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ধনিকতন্ত্র কায়েম হওয়ার। সম্প্রতি কেন্দ্র যে পরিবারগুলির মাসিক খরচ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানেও প্রকট হয়েছে আর্থিক ভাবে এগিয়ে থাকা অংশের সঙ্গে নিচু তলার অংশের ফারাক। আর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকার যে দাবিই করুক না কেন, অতি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্রের নেতৃত্বাধীন একটি দল। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোর ইনফ্লেশন কমলেও বারবার খাবারদাবারের দাম মাথা তোলা সামগ্রিক ভাবে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হারকে দ্রুত কমাতে দিচ্ছে না। শীতকালে বাজারে নতুন আনাজ এলে খাবারের দাম কমবে বলে আশা করা হলেও তা হয়নি। যদিও সরকারের পূর্বাভাস, এ বছর বর্ষা স্বাভাবিক হবে। তার হাত ধরে কমবে খাদ্যপণ্যের দাম। এর পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির বিরূপ পরিস্থিতির জন্য রফতানি ফের ধাক্কা খেলে মুশকিল। শুধু দেশের বাজারের চাহিদায় নির্ভর করে বসে থাকলে অর্থনীতি ফের ধাক্কা খাবে।