ফাইল ছবি
হয় ঠিকমতো কাজ করে সংস্থাকে বাঁচাতে হবে। নয়তো স্বেচ্ছাবসর (ভিআরএস)। সরকারি দফতরের মতো ‘ঢিলেঢালা’ মনোভাব বরদাস্ত নয়। বিএসএনএলের শীর্ষ কর্তা থেকে সব কর্মীকে এ ভাবেই কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন টেলিকমমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কর্মীরাও সংস্থাকে বাঁচাতে চান, দাবি অন্যতম কর্মী সংগঠন বিএসএনএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের (বিএসএনএলইইউ)। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থাটির উন্নতি ঘটাতে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে তাদের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি সংস্থাগুলি ৫জি পরিষেবার জন্য দৌড়লেও বিএসএনএল স্পেকট্রাম না-পাওয়ায় ৪জি-ই চালু করতে পারেনি। বেসরকারিরা বিদেশি প্রযুক্তি বা যন্ত্র ব্যবহার করলেও শুধু নতুন দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের নিদান হেঁকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএসএনএলকে।
সম্প্রতি দিল্লির সদর দফতরে সব সার্কলের সিজিএম-সহ বিএসএনএলের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে সিএমডি-র বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন বৈষ্ণবও। সেখানে তাঁর বার্তা, সরকার ১.৬৪ লক্ষ কোটি টাকার দ্বিতীয় ত্রাণ প্রকল্প এনেছে। টেলিকম কৌশলগত ক্ষেত্র বলে সংস্থাটিকে চাঙ্গা করতে চায় তারা। এ বার ৬২,০০০ কর্মীকেও সমান দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে। ‘সরকারি কর্মীদের একাংশের মতো কর্মসংস্কৃতি’ চলবে না। তাঁর কড়া বার্তা, ‘‘হয় কাজ করুন, নয়তো ভিআরএস নিয়ে ছুটি নিন।’’ ২০১৯ সালের পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে প্রায় অর্ধেক কর্মী-অফিসার স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। রেলের উদাহরণ টেনে মন্ত্রীর দাবি, ভিআরএসে বাধা দিলে ৫৬জে নিয়মে বাধ্যতামূলক ভাবে তা দেওয়া হবে।
অফিসের পরিচ্ছন্নতা থেকে গ্রাহক পরিষেবার মান নিয়ে বিএসএনএলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘‘গ্রাহক ফোন করলে রিলায়্যান্স জিয়ো-এয়ারটেলের চেয়েও ভাল ভাবে কথা বলতে হবে।’’ ৪জি-র সঙ্গে ৫জি-র জন্যও প্রস্তুতি শুরুর বার্তা দিয়ে স্পষ্ট জানান, সংস্থাটিকে ৪জি-র নতুন দেশীয় প্রযুক্তিই নিতে হবে।
বিএসএনএলইইউয়ের সাধারণ সম্পাদক পি অভিমন্যুর পাল্টা দাবি, কর্মীরা সংস্থাকে রক্ষা করতে চাইলেও সরকারই পাশে দাঁড়ায় না। ২০১৯ সালে আশ্বাস সত্ত্বেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে জরুরি ৪জি স্পেকট্রাম, প্রযুক্তি ও যন্ত্র ঠিক সময় মেলেনি। বেসরকারি সংস্থা বিদেশি যন্ত্র কিনলেও, বিএসএনএল পারে না। তার উপরে দেশীয় প্রযুক্তি কতটা প্রামাণ্য, এখনও সেই নিশ্চয়তা মেলেনি। বৈষ্ণবের দাবি, যে কোনও প্রযুক্তিই ধাপে ধাপে উন্নত হতে পারে।