দেশের বৃহত্তম গাড়ি সংস্থার শিরোপা পেলেও দামি গাড়ির বাজারে এখনও কুলীন নয় মারুতি-সুজুকি ইন্ডিয়া। আগে কয়েক দফায় চেষ্টা চালিয়েও ওই ধরনের ক্রেতার ভরসা কুড়োতে পারেনি তারা। এ বার একেবারে নতুন গাড়ি ‘এস-ক্রস’ বাজারে এনে ফের দামি গাড়ির বাজারে জায়গা পেতে আগ্রহী সংস্থাটি।
দামি গাড়ি বিক্রির জন্য সম্পূর্ণ নতুন ধাঁচের বিপণন পরিকাঠামোও গড়ছে তারা, যার জেরে দামি গাড়িই ঠাঁই পাবে নির্ধারিত কিছু শো-রুমে। এবং প্রত্যেক ক্রেতার জন্য থাকবেন একজন করে ‘রিলেশনশিপ ম্যানেজার’।
এর আগে তাদের ভাঁড়ারে থাকা কিজাশি বা অন্য দামি গাড়িগুলি সম্পূর্ণ ভাবে জাপান থেকে আমদানি করত মারুতি-সুজুকি। ফলে দামও পড়ত অনেক বেশি। সব মিলিয়ে অন্য বহুজাতিক দামি গাড়ি সংস্থাগুলির কৌলিন্যে ঢাকা পড়ে যেত মারুতি-সুজুকি। এ বার এস-ক্রস গাড়িটি ভারতের কারখানাতেই তৈরি করবে তারা। পাশাপাশি সংস্থার দাবি, এই গাড়িটি বাজারে সম্পূর্ণ ভাবে নতুন। কারণ একই গাড়িতে ‘সেডান’ ও ‘এসইউভি’ ধরনের গাড়ির বৈশিষ্ট্য (ক্রসওভার) রয়েছে। ১.৩ লিটার ও ১.৬ লিটার ডিজেল ইঞ্জিনের গাড়িগুলির কলকাতায় দাম পড়বে ৮.৮২ লক্ষ টাকা থেকে ১৪.৩৭ লক্ষ টাকা।
এই গাড়ি বিক্রি হবে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের শো-রুম ‘নেক্সা’ থেকে। যেখানে হাতে গোনা কয়েকটি গাড়ি থাকবে। বস্তুত, এক গাদা লোকের ভিড়ের মধ্যে গাড়ির দেখা নয়, বরং সম্ভাব্য ক্রেতাকে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যের সুযোগ দেওয়াটাই যে-মূল লক্ষ্য, তা স্পষ্ট হয় সংস্থার সিনিয়র ভিপি (নিউ চ্যানেল, মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও। এ দিন কলকাতায় তিনি জানান, সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে তাঁরা যে-উচ্চবিত্তদের কথা মাথায় রাখছেন, তাঁদের জীবনযাত্রাই কিছুটা আলাদা। এই প্রথম নয়, আগেও তাঁরা গাড়ি কিনেছেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তাই নেক্সা-তে অন্য রকম অভিজ্ঞতার স্বাদ দিতে চান তাঁরা। প্রত্যেকের জন্য তাই একজন করে রিলেশনশিপ-ম্যানেজার নিয়োগ করছেন ডিলাররা। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদেরও বিশেষ ভাবে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের জন্য বিমানে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নামী পাঁচতারা হোটেলে তাঁদের রাখা হয়, যাতে সম্ভাব্য ক্রেতাদের জীবনযাত্রার আভাস পেতে পারেন সেই ম্যানেজাররা। গাড়ি দেখানো থেকে শুরু করে একেবারে বিক্রি পর্যন্ত ক্রেতার সব কিছুই দেখভাল করবেন তাঁর জন্য নিযুক্ত ম্যানেজার। গাড়ির ‘সার্ভিসিং’-এর জন্য নিয়মিত সুবিধা ছাড়াও ক্রেতা বাড়তি খরচ করলে বাড়ির দরজায়ও কিছু সুবিধা মিলবে।
আপাতত দেশ জুড়ে ৩৫টি নেক্সা চালু হয়েছে। পার্থবাবু জানান, চলতি অর্থবর্ষের শেষে তা ১০০-তে পৌঁছবে। কলকাতায় চেতলা ও পার্ক স্ট্রিটে চালু হচ্ছে দুটি শো-রুম।