US

চিন থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে ভারতকে গন্তব্য বানাতে আগ্রহী একাধিক মার্কিন সংস্থা

তবে ইন্দো-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কে এখনও বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ১৭:০৮
Share:

ছবি: শাটারস্টক।

চড়া শুল্ক নিয়ে দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এ বার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে নভেল করোনা। কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপে উদ্ভুত অতিমারির জন্য ইতিমধ্যেই চিনকে দায়ী করেছে মার্কিন সরকার। এ বার সেখান থেকে ব্যবসা গোটানোর চিন্তা ভাবনাও করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি এবং অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির এই টানাপড়েনে লাভবান হতে পারে ভারত। কারণ চিন থেকে ব্যবসা সরিয়ে এনে ভারতকেই উৎপাদনকেন্দ্র হিসাবে বেছে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বেশ কিছু মার্কিন সংস্থা।

Advertisement

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) এবং ইউএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের (ইউএসআইবিসি)-র একটি যৌথ রিপোর্ট থেকে এমনটাই জানা গেল। তবে ইন্দো-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কে এখনও বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস। এর আওতায় এত দিন মার্কিন বাজারে বিশেষ সুবিধা ভোগ করত ভারত। যে কারণে বিনা শুল্কেই বেশ কিছু পণ্য সে দেশে রফতানি করতে পারত ভারত।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মতিতে সম্প্রতি তাতে ইতি পড়ে। ভারত চায়, আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনুক মার্কিন সরকার। বিনা শুল্কে মার্কিন বাজারে নির্দিষ্ট কিছু ভারতীয় পণ্যকে ঢুকতে দেওয়া হোক। একই ভাবে ভারতে স্বাধীন ভাবে কৃষিজাত পণ্য এবং চিকিৎসা যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতে চায় মার্কিন সরকার। ডিজিটাল পণ্য-সহ তাদের একাধিক পণ্য থেকে ভারত শুল্ক প্রত্যাহার করুক, এমনটাও দাবি তাদের। তাই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দু’পক্ষের মধ্যে এ নিয়ে কোনও নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন সরকার ভারতে নতুন করে বিনিয়োগ করবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে আসরে ডোভাল, পুলিশ-গোয়েন্দা যৌথ অভিযানে খালি করা হল নিজামউদ্দিন​

সিআইআই এবং ইউএসআইবিসি-এ রিপোর্টেও তা ধরা পড়েছে। বলা হয়েছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আগে দুই দেশকে যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে হবে। তবেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ আরও প্রশস্ত হতে পারবে। ঠিক কোন পথে এগোলে দুই দেশই লাভবান হবে, তার জন্য মঙ্গলবার ৫০ হাজার কোটি ডলারের একটি রূপরেখাও প্রকাশ করেছে সিআইআই এবং ইউএসআইবিসি।

এর আগে, গত বছর এপ্রিলে সিআইআই এবং ইউএসআইবিসি ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম (ইউএসআইএসপিএফ)-ও একই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল। ইন্দো-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও কৌশলগত সহযোগিতা মজবুত করাই মূল লক্ষ্য ইউএসআইএসপিএফ-এর। সেইসময় সংস্থার প্রেসিডেন্ট মুকেশ আঘি জানিয়েছিলেন, প্রায় ২০০টি মার্কিন সংস্থা চিন থেকে ব্যবসা সরিয়ে এনে ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্র বানাতে চায়। ২০২০-র মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যেতে পারে বলে সেইসময় মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তরবঙ্গে আরও চার জনের করোনা সংক্রমণ​

তার পর, এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সপরিবারে ভারত সফরে আসেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেইসময় দুই দেশের মধ্যে বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও, শেষ মেশ তা হয়ে ওঠেনি। দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত করতে আসার কথা ছিল সে দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজারেরও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করে দেন তিনি। কিন্তু গত চার মাস ধরে করোনার সঙ্গে যুঝতে থাকা চিনে ঝাঁপ বন্ধ করার পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে মার্কিন সংস্থাগুলির। এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি আদৌ কাটিয়ে ওঠা যাবে কি না সে ব্যাপারে সন্দিহান মার্কিন অর্থনীতিবিদরা। এমন পরিস্থিতিতে চিনের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ভারতকে প্রাধান্য দিতে চাইছে মার্কিন সংস্থাগুলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement