প্রতীকী চিত্র।
রেকর্ড ফলন সত্ত্বেও কাঁচা পাটের অভাবে রাজ্যে ফের বন্ধ হতে শুরু করেছে চটকল। ইতিমধ্যেই হাওড়ার ডেলটা জুট মিল এবং টিটাগড় জুট মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেখানে কাজ করেন প্রায় ৬৫০০ কর্মী। চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ-র দাবি, জুট কমিশনারের দফতর কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা কুইন্টালে ৬৫০০ টাকায় বাঁধলেও, বেআইনি মজুতদারির জেরে বাজারে আদতে তার থেকে বেশি দামে পাট কিনতে হচ্ছে। ফলে সমস্যা বাড়ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দিনে আরও চটকল বন্ধ হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে জুট কমিশনারকে দামের ঊর্ধ্বসীমা তুলতে আর্জি জানিয়েছে রাজ্য।
ডেপুটি জুট কমিশনার কৌশিক চক্রবর্তী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মজুতদারেরা চাষিদের থেকে ইতিমধ্যেই সিংহভাগ কাঁচা পাট কিনে মজুত করে রেখেছে। এক শ্রেণির অসাধু মিল মালিকও সেই পথে হাঁটছেন। জুট কমিশনারের দফতর এর দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে কুইন্টালে ৬৫০০ টাকায়। কিন্তু মজুতদারেরা চাইছে, কৃত্রিম অভাব তৈরি করে তা বাড়িয়ে নিতে। যার হাত ধরে মজুত করা পাট বাজারে বিক্রি করে বেশি মুনাফা করতে চায় তারা।’’
আইজেএমএ-র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তের আবার অভিযোগ, সর্বোচ্চ দাম স্থির হওয়ার পরে বাজারে কাঁচা পাটের অভাব দেখা গিয়েছে। শুরু হয়েছে তার কালোবাজারি। তাঁর কথায়, ‘‘কুইন্টালে ৭২০০-৭৩০০ টাকা দিয়ে কাঁচা পাট কিনছি। কিন্তু কেন্দ্র তা ৬৫০০ টাকা ধরে চটের বস্তার দাম দিচ্ছে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে। যে কারণে ফের চটকল বন্ধ হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই দু’টি বন্ধ হয়েছে। এই অবস্থা চললে আরও বন্ধ হবে।’’
এই অবস্থায় জুট কমিশনারকে দামের ঊর্ধ্বসীমা তুলতে বলেছে রাজ্য। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, “গত বছর আমপান-সহ নানা কারণে কাঁচা পাটের আকাল দেখা দেওয়ায় বহু চটকল বন্ধ হয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষ কাজ হারান। অনেক চেষ্টার পর রাজ্যের মধ্যস্থতায় প্রায় সবক’টি বন্ধ মিল খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা চাই না ফের সেই অবস্থা হোক।’’ তাঁর কথা, ‘‘মজুত কাঁচা পাট উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য অভিযানে নেমেছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৭৯৮ টন কাঁচা পাট। অত্যাবশ্যক পণ্য আইনে ১৩টি মামলাও হয়েছে। আমরা চাই আপাতত কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা তোলা হোক।’’ চটকল মালিকদের দাবি, হয় ঊর্ধ্বসীমা তোলা হোক, নয়তো তা বাঁধা হোক ৭২০০ টাকায়। এ বার একই কথা বলল রাজ্য।