— প্রতীকী চিত্র।
একেই এখন রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারে নামমাত্র ভর্তুকি দেয় কেন্দ্র। তার উপর সেই টাকাও নিয়মিত বহু গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে না। সূত্রের খবর, খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে তাঁদের অজান্তে কোনও না কোনও কারণে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে আটকে যাচ্ছে ভর্তুকি। সূত্র বলছে, গত এক বছর ধরে কোন কোন গ্রাহকের ভর্তুকি পাওয়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, তার বিস্তারিত তালিকা তেল সংস্থাগুলির হাতে দিয়েছে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এর মোট অঙ্ক বেশ কয়েক কোটি টাকা। তেল সংস্থাগুলি তা ইতিমধ্যেই গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর বা বিক্রেতাদের কাছে পাঠিয়েছে। ওই গ্রাহকদের কেওয়াইসি অর্থাৎ নাম-ঠিকানা সমেত প্রাথমিক তথ্যগুলি দ্রুত জমা বা সংশোধন করার মৌখিক নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও গ্রাহক আর ভর্তুকি নিতে না চাইলে, তা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিতে হবে। একাংশের প্রশ্ন, বহু দিন ধরে গ্যাস সংযোগের সঙ্গে আধারভিত্তিক কেওয়াইসি জোড়া প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তেল সংস্থাগুলি। কেন্দ্র সেই নির্দেশই দিয়েছে। তার পরেও ভর্তুকি পেতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে কেন?
বর্তমানে রাজ্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৮২৯ টাকা। কলকাতা ও শহরতলিতে সাধারণ গ্রাহকেরা সিলিন্ডার প্রতি ভর্তুকি পান ১৯.৫৭ টাকা। জেলাগুলির কোথাও তা ৪ টাকা, আবার কোথাও ১০ টাকা। কিছু কিছু অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ভর্তুকি শূন্যে নেমেছে বলেও খবর। সংশ্লিষ্ট মহলের ক্ষোভ, গ্যাসের দাম চড়া। অথচ এখন কেন্দ্রীয় সাহায্য কমে নামমাত্র হয়েছে। জিনিসপত্রের চড়া দামে নাভিশ্বাস ওঠা সাধারণ এবং স্বল্প আয়ের বড় সংখ্যক মানুষ সেটুকুও না পেলে, তা হতাশাজনক।
সর্বভারতীয় এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বিজন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বেশ কিছু প্রযুক্তিগত কারণে অনেকের নাম বাদ চলে গিয়েছে। আধারভিত্তিক যে সংযুক্তিকরণ হচ্ছে, তাতেও কিছু সমস্যা থাকতে পারে। যে কারণে গ্রাহকদের একাংশের কাছে ভর্তুকি পৌঁছোচ্ছে না। এটা হঠাৎ হয়েছে এমন নয়।’’ তিনি জানান, ভর্তুকির অঙ্ক এত কম যে, বহু গ্রাহক বিষয়টি খেয়াল করেননি। মন্ত্রকের কাছ থেকে সেই তালিকা এসেছে। তালিকা অনুযায়ী ফের গ্রাহকদের আধারভিত্তিক কেওয়াইসি করা হচ্ছে।
ভারত গ্যাস অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুকোমল সেন বলেন, ‘‘ভর্তুকি না পাওয়া গ্রাহকদের তালিকা তেল সংস্থাদের তথ্যভান্ডার, পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থেকে নিয়মিত আসে। সেই তালিকা অনুযায়ী ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে তা পাঠানো হচ্ছে।’’ তবে সাইবার অপরাধের সমস্যার কারণেও অনেকের নাম বাদ চলে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও এই নিয়ে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘‘ভর্তুকি না পাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে তা নয়। এটা নিরন্তর প্রক্রিয়া। আমরা ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি যাতে সব গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ঢোকে।’’