ইনফোসিস কর্তা এন আর নারায়ণমূর্তি। —ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাসের মোকাবিলা, নাকি অর্থনীতির চাকা সচল করা? করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে লকডাউন চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু অর্থনীতিতে গতি আনতে গেলে লকডাউন তুলে নেওয়া উচিত। এই সঙ্ঘাতে দ্বিতীয় পথেই এগনো উচিত বলে মনে করেন এন আর নারায়ণমূর্তি। শুধু তাই নয়, ইনফোসিস কর্তার মতে, লকডাউন তুলে না নিলে ‘করোনায় যত মানুষের মৃত্যু হবে, অনাহারে মারা যাবেন তার চেয়ে বেশি মানুষ’। বুধবার শিল্পপতিদের সঙ্গে এক ভিডিয়ো আলাপচারিতাই এমনই বার্তা দিয়েছেন নারায়ণমূর্তি।
একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, অন্তত আগামী এক থেকে দেড় বছর করোনাভাইরাসের সঙ্গেই সমান্তরাল ভাবে জীবনযাত্রা চালিয়ে যাওয়ার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে ভারতবাসীকে। তিনি বলেন, ‘‘ভারতে কোভিড-১৯ টেস্টের হার এখনও অনেক কম। তবে সারা বিশ্বেই এর টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। আমাদের মেনে নিতে হবে, করোনাভাইরাস আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অঙ্গ।’’
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন চালিয়ে গেলে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন নারায়ণমূর্তি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল, এই পরিস্থিতি (লকডাউন) আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চালিয়ে যেতে পারব না। কারণ একটা সময় আসবে, যখন করোনায় মৃতের সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাবে অনাহার ও অপুষ্টিতে মৃত্যু।’’
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড দেশে
ভারত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উন্নত দেশগুলির চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভারতে মোট আক্রান্তের ০.২৫ থেকে ০.৫ শতাংশ মৃত্যুর হার বহু উন্নত দেশের তুলনায় অনেক কম। তবে টেস্টিংয়ের হার বাড়ানো উচিত বলেই মনে করেন ইনফোসিস কর্তা। তাঁর মতে, ‘‘ভারতে এখনও টেস্টিংয়ের হার অত্যন্ত কম। সারা বিশ্বে যখন ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে, তখনও এটা স্পষ্ট নয় যে ভারতীয়রা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে জিনগত ভাবেই লড়াইয়ের ক্ষমতা তৈরি করে ফেলেছে কি না। তাই এটা ধরেই নিতে হবে যে করোনাভাইরাস ভারতে স্বাভাবিক। জীবনযাত্রার অঙ্গ।” একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন, অভিনব পন্থা উদ্ভাবন করে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করতে হবে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ১০৫ করোনা আক্রান্তের মৃত্যু, তবে করোনার কারণেই মৃত ৩৩: নবান্ন
তবে ভারতে করোনার যুদ্ধে অনেকগুলি সদর্থক দিকও খুঁজে পেয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্তা। তাঁর মতে, ভারত অনেক আগে থেকেই এই ভাইরাসের বিপদ আন্দাজ করে আগেভাগে লকডাউন ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও রাজনীতি ভুলে রাজ্য সরকারগুলিও কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। আবার দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিক-মজুর শ্রেণির হাতে টাকা ও খাদ্য তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করাও অবশ্যই দেশবাসীর পক্ষে সুবিধা হয়েছে। তবে শুধু এই শ্রেণি নয়, স্টার্ট আপ বা ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রের জন্যও আরও বেশি সাহায্য বা প্যাকেজ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন নারায়ণমূর্তি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)