প্রতীকী ছবি।
অনেকের প্রথম পছন্দ হতে পারে। আবার দামি ধাতুর তালিকায় সোনার তুলনায় দাম কম বলে কারও কাছে বিকল্পও হতে পারে। যা-ই হোক না কেন, হালে কদর বাড়ছে রুপোর— শুধু গয়নায় নয়, লগ্নির জগতেও। সেটা মাথায় রেখেই সিলভার ইটিএফ আনার প্রস্তাবে সায় দিল বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। ঠিক যেমন সোনায় লগ্নির জন্য রয়েছে গোল্ড ইটিএফ। আদতে মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্প। শেয়ার বাজারে কেনাবেচা হয় বলে নাম ‘এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড’ (ইটিএফ)।
সেবি সূত্রের দাবি, বাজারে রুপোর দাম বাড়লে সেই অনুযায়ী সিলভার ইটিএফে লগ্নিকারীর রিটার্ন বাড়বে। দাম বৃদ্ধির সুবিধা সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছতেই এমন উদ্যোগ। বিশেষত রুপো যেহেতু অনেক বেশি মানুষের নাগালে। তবে দাম পড়লে রিটার্ন কমবে। যেমন হয় ফান্ডে। বাজার বিশেষজ্ঞ দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর মতে, ‘‘যাঁরা রুপোয় লগ্নি করতে চান, তাঁদের পক্ষে ইটিএফ কেনা অনেক সহজ। কারণ, রুপোর মতো দামি বস্তু কাছে থাকলে নিরাপত্তার চিন্তা থাকেই। পণ্য লেনদেনের বাজারে তাতে লগ্নি সম্ভব হলেও, ওই প্রক্রিয়া জটিল ও ঝুঁকির। সেখানে ফাটকাবাজদের বড় ভূমিকা থাকে। ইটিএফে সেই আশঙ্কা কম। তা ছাড়া, পণ্য লেনদেনের বাজারে পুঁজিও লাগে বেশি।’’ শেয়ার বাজারে ইটিএফের ইউনিট বিক্রি করে নগদ টাকা হাতে পাওয়ার পদ্ধতিও অনেক সহজ, দাবি একাংশের।
বহু দিন ধরেই সিলভার ইটিএফ চালুর দাবি উঠছিল। অবশেষে গত মঙ্গলবার তা চালুর জন্য মিউচুয়াল ফান্ড বিধি সংশোধনে সায় দেয় সেবির পর্ষদ। তবে শর্ত, গোল্ড ইটিএফের মতোই নিশ্চিত করতে হবে লগ্নিকারীর সুরক্ষা কবচ। প্রকল্প থেকে সংগৃহীত টাকা দিয়ে ফান্ডগুলিকে বাজার থেকে রুপো কিনে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এখনও সিলভার ইটিএফে লগ্নির বিস্তারিত নিয়ম জানানো হয়নি। তবে ইটিএফের ইউনিট সাধারণত শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ থাকে। শেয়ারের মতোই কেনাবেচা চলে।
২০০৭ সালে বাজারে এসেছিল গোল্ড ইটিএফ। এর আওতায় এখন পরিচালিত হয় ১৬,৩৫০ কোটি টাকার সম্পদ (গত ৩১ অগস্ট পর্যন্ত)। আশিসের মতো বিশেষজ্ঞদের আশা, সাড়া মিলবে রুপোর ক্ষেত্রেও। মর্নিংস্টার ইন্ডিয়ার গবেষণা বিভাগের ডিরেক্টর-ম্যানেজার কৌস্তব বেলাপুরকার অবশ্য আগেভাগে সতর্ক করে রাখারও পক্ষপাতী। তাঁর দাবি, ‘‘সোনা কিনতে না-পেরে অনেকেই রুপোয় লগ্নি করতে চান। তবে জেনে রাখা ভাল, এই ধাতুর দামেও বিস্তর ওঠাপড়া হয়। লগ্নির আগে সেই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।’’