প্রতীকী ছবি।
করোনা যুঝতে দীর্ঘ লকডাউনের সময় প্রবীণ পেনশনভোগীদের একাংশের বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা চালু করেছিল ডাক বিভাগ। তার পরে এনেছিল ঘরে বসেই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের আধার তথ্যের ভিত্তিতে টাকা তোলার সুবিধা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাকঘরে পিপিএফের অ্যাকাউান্ট খুলে দেওয়ার মতো পদক্ষেপও করে তারা। এ বার ডাক বিভাগের নতুন পরিষেবা পেনশনভোগীদের বাড়িতে বসেই ‘ডিজ়িটাল লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এই পরিষেবা চালু করছে তাদের শাখা ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি)।
ডাক বিভাগের চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল) মার্ভিন আলেকজ়ান্ডার বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, প্রস্তুতি তুঙ্গে। ১ নভেম্বর থেকেই ডাকঘরের তরফে বাড়ি গিয়ে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার পরিষেবা শুরু হচ্ছে। এই পরিষেবা চাইলে আবেদন করতে হবে।
প্রচলিত নিয়মে প্রতি বছরের শেষের দিকে নির্দিষ্ট একটি সময়ে সশরীরে ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে গিয়ে পেনশনভোগীদের লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। কিন্তু অনেক প্রবীণের পক্ষেই সশরীরে হাজির হওয়া সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে ব্যাঙ্কের কর্মীরা অনেক সময় ওই পেনশনভোগীদের বাড়িতে গিয়ে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন। এ ছাড়া, ডিজ়িটাল পদ্ধতিতে ‘জীবন প্রমাণ’ পোর্টালের মাধ্যমেও লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া যায়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে পেনশনভোগীর আধার নম্বরের পাশাপাশি তাঁর বায়োমেট্রিক তথ্যও (মূলত আঙুলের ছাপ) পোর্টালে সংযুক্ত করতে হয়। সকলের পক্ষে সেই যন্ত্র কেনা যেমন সম্ভব হয় না, তেমনই প্রযুক্তিগত সমস্যারও আশঙ্কা থাকে।
•বাড়িতে বসেই পেনশনভোগীরা যাতে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেন, সেই পরিষেবা দেবে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি)।
•এ রাজ্যে তা চালু নভেম্বরে।
•পরিষেবা পেতে আবেদনের ফোন নম্বর ১৫৫২৯৯।
•পরিষেবার খরচ ৭০ টাকা।
•পেনশনভোগীর আধার নম্বর ও মোবাইল
থাকতে হবে।
•পেনশন বণ্টনকারী
সংস্থা, যেমন ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে আধার নথিভুক্ত থাকতে হবে।
•যে সংস্থা পেনশন দেয় এবং যারা তা বণ্টন করে, উভয়কেই জীবন প্রমাণ পোর্টালে নথিভুক্ত
থাকতে হবে।
•কেন্দ্র এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকারের দফতরগুলি ছাড়াও ডিভিসি, ব্যাঙ্ক, ইপিএফও, এলআইসি, নাবার্ড, ওএনজিসি, ডাক বিভাগ, রেল, টেলিকম, হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট, আরবিআইয়ের মতো সংস্থা সেখানে নথিভুক্ত।
এর পাশাপাশি এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে। ডাকঘরেও সম্প্রতি তা চালু হয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও সেই কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হয়। করোনাকালে প্রবীণদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেই সুবিধাই ঘরের অন্দরে পৌঁছে দিতে চায় আইপিপিবি। যে কারণে ডাক-কর্মীরাই ওই পরিষেবার যন্ত্র নিয়ে আবেদনকারীর বাড়ি যাবেন। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এতে প্রবীণ নাগরিকদের ঝক্কি কমবে। আবার এর মাধ্যমে ডাক বিভাগের কিছুটা ব্যবসাও হবে।
মার্ভিন জানান, বাড়িতে ওই পরিষেবা দেওয়ার জন্য ডাক কর্মীরাও কমিশন পাবেন। তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চলছে। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার ডাক বিভাগকে জানিয়েছে, তাদের পেনশন বণ্টনের প্রক্রিয়া এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। ফলে এ রাজ্যের সরকারি কর্মী, শিক্ষক-সহ অন্যান্যদের আধার তথ্য সেই ব্যবস্থায় যুক্ত থাকলে, তাঁরা এই সুবিধায় উপকৃত হবেন বলে আশা মার্ভিনের।