প্রতীকী ছবি।
এক দিন ধস তো পর দিন বিপুল উত্থান! কখনও উত্থান-পতন সামান্য হলেও লেনদেনে টালমাটাল বাজার! এই পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষেই বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) প্রথম শেয়ার (আইপিও) বিক্রির ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। অতিমারির উপর্যুপরি ঢেউ, উঁচু মূল্যবৃদ্ধি, অশোধিত তেলের বিপুল দাম, মস্কো-কেভ অশান্তি-সহ বিভিন্ন কারণে শেয়ার বাজার বেশ কিছু দিন ধরে অস্থির। যা স্বল্প মেয়াদে কাটার সম্ভাবনা দেখছেন না বাজারের কারবারিরা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যে পৌঁছনো এবং রাজকোষ ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে কর্মসূচির দিকে কেন্দ্র তাকিয়ে, তার সময় নির্বাচন কি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেল? বিশেষজ্ঞদের অবশ্য ধারণা, এলআইসি যে রকম শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য সংস্থা, তাতে বাজারের ওঠাপড়ার প্রভাব তার আইপিও-র উপরে পড়াবে না। বাজারে অস্থিরতা থাকলেও এলআইসির শেয়ার নিয়ে লগ্নিকারীরা নিশ্চিন্ত।
সম্প্রতি বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির কাছে এলআইসির আইপিও-র খসড়া জমা দিয়েছে কেন্দ্র। লগ্নি ও সরকারি সম্পদ পরিচালনা দফতরের সচিব তুহিনকান্ত পাণ্ডে জানিয়েছেন, শেয়ারের দাম ও বাজারে তা ছাড়ার দিনক্ষণ শীঘ্রই ঘোষিত হবে।
চলতি অর্থবর্ষেই ৬০,০০০ অঙ্ক পার করেছিল সেনসেক্স। পরে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ও বিক্রির চাপে তা নেমে আসে। তার পর থেকেই বাজার অস্থির। তবে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এমডি, বর্তমানে এনপিএসের অছি পরিষদের চেয়ারম্যান তথা বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ অতনু সেনের মতে, ‘‘এলআইসি-কে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। ভারতে জীবন বিমার বাজারের ৬৫% তাদের দখলে। সংস্থার অন্তর্নিহিত মূল্য (এমবেডেড ভ্যালু) ৫.৪০ লক্ষ কোটি টাকা। আইপিও-র শেয়ার বিক্রির জন্য অনেক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা। বাজারের অনিশ্চিত অবস্থা সত্ত্বেও শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে তাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’
মার্চেন্ট চেম্বারের ফিনান্স এবং ব্যাঙ্কিং কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র এবং দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দীর কথায়, ‘‘বাজারের ঊর্ধ্বগতির সুবাদে বেশ কিছু স্টার্ট-আপ সংস্থার আইপিও উতরানোর পরে তাদের শেয়ারের দামে পতন হয়েছে ঠিকই, তবে এলআইসির মতো সংস্থায় লগ্নির সুযোগ খুচরো লগ্নিকারী-সহ কেউই হাতছাড়া করবে না।’’ রাজকোষ ঘাটতির মোকাবিলা এবং পরিকাঠামোয় লগ্নির জন্য অর্থের সংস্থান করতে এলআইসির শেয়ার থেকে আয়ের উপরে অনেকটা নির্ভর করছে কেন্দ্র। সে কারণে ইসুর সময় পিছোনোর সম্ভাবনা তেমন নেই বলে মত আইআইটি পটনার অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র প্রামাণিকের।