মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন।
দেশের অর্থনীতির হাল কত দ্রুত ফিরবে, কলকাতায় এসে এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে সম্প্রতি দাবি করেছেন তার চাঙ্গা হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বুধবার আইআইএম-কলকাতায় এসে সেই লক্ষণ দেখা যাওয়ার দাবি করলেন দেশের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যনও। টানলেন বৃদ্ধির হারে শ্লথ গতি কাটাতে কেন্দ্রের একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার প্রসঙ্গ। তবে অর্থমন্ত্রীর মতো তিনিও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে কবে, সেই ইঙ্গিত দিলেন না। উল্টে বললেন, ‘‘যে কোনও ক্ষেত্রেই ফল পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’’
এ দিনই খোদ সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে শিল্পোৎপাদনের গোত্তা খেয়ে পড়ার কথা। কল-কারখানায় উৎপাদনের ঝিমিয়ে থাকার কথাও। কিন্তু ‘অরিজিৎ মুখার্জি স্মৃতি বক্তৃতা’ দিতে এসে আইআইএম-কলকাতারই প্রাক্তনী সুব্রহ্মণ্যন যুক্তি দিয়েছেন, উৎপাদনমুখী শিল্প সূচক গত আট বছরে সর্বাধিক। আর পরিষেবা ক্ষেত্রের সূচক সাত বছরে সর্বাধিক। যদিও সরকারি হিসেব নয়, এ ক্ষেত্রে সীতারামনের মতোই তাঁর হাতিয়ার শিল্পে উৎপাদনের ইঙ্গিতবাহী বেসরকারি সূচকের ইতিবাচক ইঙ্গিত। তাঁর দাবি, এমনকি ঝিমুনি কাটার দিশাও দেখা যাচ্ছে।
তবে কত দ্রুত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে সে প্রশ্নের জবাবে তাঁর বক্তব্য, হোটেলের ঘরে ‘এসি’র ঠান্ডা কমালে সঙ্গে সঙ্গেই ফল মেলে না। তাপমাত্রা বাড়তে কিছুটা সময় লাগে। কিছুটা সমালোচনার সুরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি অর্থনীতিবিদ। জ্যোতিষী নই।’’
আর্থিক সমীক্ষায় আগামী অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৬-৬.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলা হলেও, বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। কিন্তু সুব্রহ্মণ্যনের দাবি, এর স্বপক্ষে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। বাজেটেও মূলধনী ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। আইআইএমসিতে এসে দৃশ্যতই খুশি এই প্রাক্তনী এ দিন পড়ুয়াদের শিক্ষকতার পথেও পা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন। পাশাপাশি তাঁর আর্থিক সমীক্ষার বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরে ব্যাখ্যা করেন। এ প্রসঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন প্রত্যাহার, সংস্থার দক্ষতা বাড়াতে বিলগ্নিকরণের পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা।