কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক। —ফাইল চিত্র।
তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামোয় কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কে। বুধবার তাই তাদের অনলাইন এবং মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে নতুন গ্রাহক নথিভুক্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। বেসরকারি ব্যাঙ্কটি আপাতত নতুন ক্রেডিট কার্ডও মঞ্জুর করতে পারবে না। শীর্ষ ব্যাঙ্কের বার্তা, তাদের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত ঝুঁকি সামলানোর ক্ষেত্রে ‘গুরুতর ঘাটতি’ সামনে এসেছে। গ্রাহক পরিষেবার স্বার্থে এবং ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় সম্ভাব্য বিপর্যয় আটকাতেই অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে পদক্ষেপগুলি। কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, তারা নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা পোক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে। দ্রুত সমস্যা দূর করতে আরবিআইয়ের সঙ্গে মিলে কাজ করবে।
আরবিআই জানিয়েছে, পরবর্তী কালে তাদের আগাম অনুমতি নিয়ে বাইরের অডিটরকে দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে খামতিগুলি দূর হল কি না। তার পরে নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে। তবে ব্যাঙ্কের বর্তমান সাধারণ এবং ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের জন্য পরিষেবা যথারীতি চালু রাখা যাবে।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক বলেছে, ২০২২ এবং ২০২৩-এ ব্যাঙ্কটির তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। পরীক্ষায় উতরোতে পারেনি ঋণদাতাটি। বরং তথ্যের সুরক্ষা, তথ্য ফাঁস, ব্যাঙ্ক পরিচালনার ক্ষেত্রে বিপর্যয় ঘটলে তার মোকবিলা করা ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করার ব্যবস্থায় সমস্যা ধরা পড়ে। দেখা যায়, অনেক দিন ধরেই তথ্যপ্রযুক্তির পরিকাঠামো সংক্রান্ত ত্রুটি সংশোধনে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। ফলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাঙ্কিং আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাঙ্কের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পর্যালোচনায় গত দুই বছর ধরে গুরুতর নানা ত্রুটি ধরা পড়ার পরে সেগুলি সংশোধন করতে তারা যে সব নির্দেশ জারি করেছিল, সেগুলিও সঠিক ভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। তথ্যপ্রযুক্তি এবং তার মাধ্যমে ঝুঁকি পরিচালনার মজবুত পরিকাঠামোর ঘাটতির জন্য গত দুই বছর ধরে কোটাক ব্যাঙ্কের কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং অনলাইন ও ডিজিটাল পরিষেবা ঘন ঘন বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল পরিষেবার বিভ্রাটে গ্রাহকরা গুরুতর সমস্যায় পড়েন। বিশেষত ক্রেডিট কার্ড-সহ ব্যাঙ্কের ডিজিটাল লেনদেনের বহর যেহেতু দ্রুত বেড়েছে। আরও বলা হয়েছে, ওই সব ত্রুটির জেরে শুধু কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা নয়, সার্বিক ভাবে দেশে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং লেনদেন এবং টাকা মেটানোর ব্যবস্থায় যাতে বিরূপ প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই পদক্ষেপগুলি করা হয়েছে।
২০২০-র ডিসেম্বরে পরিচালনায় প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ায় এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের নতুন গ্রাহক নথিভুক্তি ও নতুন ডিজিটাল প্রকল্প চালুর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আরবিআই। ত্রুটি সংশোধনের পরে ২০২২-এ তা তুলে নেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের প্রোমোটার গোষ্ঠীর একটি সংস্থা ইনফিনা ফিনান্স নির্বাচনী বন্ড মারফত বিজেপি-কে ৬০ কোটি টাকা দিয়েছে। এটি কোটাক পরিবারের মালিকানাধীন নথিভুক্ত সংস্থা। তবে ব্যাঙ্কে সংস্থাটির অংশীদারি নেই।