ফাইল চিত্র।
আপাতত ৩৮০ কোটি টাকা ধার শোধ করে ফের উড়ান শুরু করতে চায় জেট এয়ারওয়েজের নতুন মালিক মুরারিলাল জালান ও ফ্লোরিয়ান ফ্লিটজ় গোষ্ঠী। সম্প্রতি মুম্বইয়ে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালকে (এনসিএলটি) চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে তারা।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাজারে জেটের ধার যেখানে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকা। সেখানে এত কম শোধ করেই কী ভাবে পরিষেবা চালুর সুযোগ দেওয়ার কথা হচ্ছে। যদিও জেটের এক কর্তার দাবি, যতটা ধার রয়েছে বলে খবর, তার অনেকটাই আদতে বাড়িয়ে বলা। কতটা আসল বাকি, সেটা আর্থিক উপদেষ্টারা হিসেব করেন। জালান ও ফ্লিটজ় গোষ্ঠী সংস্থার দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেই হিসেব করে দেখা গিয়েছে, আদতে শোধ করার মতো ধার রয়েছে ১৫,০০০ কোটি টাকার মতো। এনসিএলটি-কে নতুন মালিক জানিয়েছে, সংস্থার উড়ান পরিষেবা চালু হলে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরে আরও ৫৯০ কোটি টাকা শোধ করা হবে। আর বাকি দাবি নিয়ে আলোচনা চলতে পারে।
কিন্তু এ ক্ষেত্রেও অনেকে বলছেন, ঋণদাতা ও পাওনাদারেরা এই হিসেব মানবেনই বা কেন? ওই কর্তার দাবি, “এ নিয়ে এখন মামলা করলে ও তার জেরে জেট চালু না-হলে আখেরে ক্ষতি হবে পাওনাদারদেরই। এতে তারা কোনও টাকাই পাবে না। কিন্তু বর্তমান প্রস্তাব মেনে নিলে দাবির কিছুটা অংশ তো পাবে। জেট নিয়মিত চালু থাকলে বাকি বকেয়া নিয়ে আলোচনা চলতে থাকবে। ফলে, এটা মানা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই তাদের সামনে।’’ পাশাপাশি জেটের ঋণদাতাদের ৯.৫% অংশীদারি দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে নতুন মালিক গোষ্ঠী। যা এই প্রস্তাব মানার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে তাঁর মত।
পরিষেবা চালুর জন্য পরিকল্পনাও ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছে জালান ও ফ্লিটজ় গোষ্ঠী। অবিলম্বে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিষেবার পাশাপাশি পণ্য পরিষেবাও শুরু করতে আগ্রহী তারা। বর্তমানে জেটের হাতে ছ’টি বিমান রয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে প্রতি মাসে একটি করে আগামী পাঁচ বছরে মোট ১২০টি বিমান নিয়ে আসতে চায় সংস্থা। লক্ষ্য রয়েছে, আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে নিজেদের আর্থিক অবস্থাকে আরও মজবুত করারও। এর আগে যেমন নরেশ গয়ালের আমলে আবুধাবির সংস্থা এতিহাদের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিল জেটের।
পাশাপাশি, কর্মীদের ৯১৩ কোটি টাকার বকেয়া বেতনের দাবির মধ্যে ৯০২ কোটি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থা সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে পরিষেবা চালু হলেই ধীরে ধীরে বকেয়া টাকা হাতে পাবেন তাঁরা। আশা তৈরি হয়েছে বর্তমানে জেটের বসে থাকা বা অন্যান্য সংস্থায় চলে যাওয়া বহু কর্মীর নতুন করে চাকরি পাওয়ারও। তবে শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার।