পাইলটেরা বেতন কম নিতে রাজি না হলে ৬০ দিনের বেশি সংস্থা চালানো শক্ত হবে বলে ছড়িয়েছিল জল্পনা। জেট এয়ারওয়েজের আর্থিক হাল নিয়ে জলঘোলা শুরু তখনই। রক্তচাপ বাড়ে ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির। সেই আশঙ্কা আরও জোরালো করে সম্প্রতি চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ পিছিয়েছে সংস্থা। যার জেরে শুক্রবার তাদের শেয়ার দর নেমেছে তিন বছরের সব থেকে নীচে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার রীতিমতো বিবৃতি জারি করে সকলকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করল জেট। জানাল, ব্যাঙ্কের ঋণ, কর্মীদের বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড-সহ সব আর্থিক দায়ই নিয়মিত মেটাচ্ছে তারা।
জেট বলেছে, তাদের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই অনুৎপাদক সম্পদ নয়। তবে সংস্থার দাবি, ‘‘জ্বালানির দাম বা়ড়া ও টাকার দাম কমার ধাক্কা সামলাতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ কমিয়ে আয় বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’
সম্প্রতি জল্পনা ছড়ায়, বাজারে জেটের ধার প্রায় ৮,০০০ কোটি। খরচ কমাতে পাইলটদের কম বেতন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাইলটেরা সংস্থার পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও, নাকচ করেন সেই প্রস্তাব।
সংস্থা বলছে
• নিয়মিত ব্যাঙ্ক ঋণ, কর্মীদের বেতন, পিএফ-সহ সমস্ত আর্থিক দায় মেটানো হয়
• এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অনুৎপাদক
সম্পদ হয়নি
• জ্বালানির দাম বাড়া ও টাকার দাম কমার ধাক্কা সামলাতে খরচ কমানো এবং আয় বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে
মাথাব্যথা
• জেটের বিপুল ধারের জল্পনা
• জ্বালানি ও ডলারের দাম বাড়ায় খরচ বৃদ্ধির ধাক্কা
• খরচ ছাঁটতে পাইলটদের বেতন কম নেওয়ার প্রস্তাব খারিজ
• কোনও স্পষ্ট কারণ ছাড়াই জুন ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশের দিন পিছিয়ে দেওয়া
• বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সেবি
• তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জগুলিও
• জেটে নজর রাখছে বিমান পরিবহণ মন্ত্রক
• সন্ত্রস্ত ঋণদাতারা
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ঘটনা যে খাতে গড়াচ্ছে তাতে বিবৃতি জারি করে অবস্থান স্পষ্ট করা ছাড়া উপায় ছিল না জেটের। কারণ—
• সংস্থার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
• পাইলটদের বেতন ছাঁটার প্রস্তাব ও তা খারিজ সেই ইঙ্গিত সত্যি হওয়ায় ইন্ধনও জুগিয়েছে।
• ফল প্রকাশে দেরির ঘোষণায় সন্ত্রস্ত লগ্নিকারীরা। সেবি, স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিমান মন্ত্রকের আতসকাচের তলায় সংস্থা। শেয়ার দর পড়ছে।
অনেকের মতে, জেট এয়ার লগ্নিকারীদের আশ্বস্ত করতে চাইছে ঠিকই। তবে তারা সত্যিই আশ্বস্ত হবেন কি না, তা বলবে সময়।