ফাইল চিত্র।
অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের আর্থিক অবস্থা ভাল এবং মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতিও অপেক্ষাকৃত নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করে মোদী সরকার। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য জয়ন্ত আর বর্মার বক্তব্য, ঋণনীতির ইতিবাচক ফল মিলতে পাঁচ থেকে ছ’টি ত্রৈমাসিক সময় লাগতে পারে। চলতি অর্থবর্ষের শেষের দিক থেকে কিছুটা ফল মেলার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। অর্থাৎ, আরও ছ’মাস। অন্য দিকে, অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, মূল্যবৃদ্ধির হারের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার জন্য শীর্ষ ব্যাঙ্কের যে মডেল রয়েছে, তাতে প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে খাদ্যপণ্যের দামের ওঠাপড়ার আঁচ ঠিকমতো পাওয়া যায় না।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হিসাব অনুযায়ী, মূল্যবৃদ্ধির আদর্শ হার ৪%। তা ২% কম-বেশি হতে পারে। অথচ গত সেপ্টেম্বরে খুচরো মূ্ল্যবৃদ্ধির হার এক লাফে ৪১ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ঠেকেছে ৭.৪১ শতাংশে। গত ন’মাস ধরে তা শীর্ষ ব্যাঙ্কের সহনসীমার উপরে। যদিও চড়া দরে লাগাম পরাতে গত মে থেকে সুদের হার আগ্রাসী ভাবে বাড়িয়ে চলেছে তারা।
সম্প্রতি জয়ন্তের কথায়, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি যে কমবে তাতে সন্দেহ নেই। কারণ, আমরা সুদের হার দ্রুত অনেকটাই বাড়িয়েছি। তবে এটা সকলেরই জানা, ঋণনীতির ইতিবাচক প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম কমতে পাঁচ-ছ’টি ত্রৈমাসিক অপেক্ষা করতে হয়।’’ গত এপ্রিল থেকে পদক্ষেপ শুরুর কথা মনে করিয়ে তাঁর আশা, চলতি অর্থবর্ষের শেষের দিকে ফল মিলতে শুরু করবে।
এ দিকে, কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের সিনিয়র ইকনমিস্ট উপাসনা ভরদ্বাজের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বে এবং দেশেও চরম আবহাওয়ার কারণে পচনশীল খাদ্যপণ্যের দামের দ্রুত ওঠানামা হয়েছে। তাই অদূর ভবিষ্যতে খাদ্যপণ্যের দাম কেমন থাকবে, তা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে আঁচ করা সম্ভব হয়নি।’’ আর্থিক বিশেষজ্ঞ এবং এএনজ়েডের কান্ট্রি রিস্ক ম্যানেজার দীশা সেহগাল বলেন, ‘‘ভারতে বিশেষ করে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বৃষ্টির বড় ভূমিকা রয়েছে। ধান উৎপাদনকারী রাজ্যগুলিতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। যা মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগায়। এই ধরনের পরিস্থিতি আগেভাগে আঁচ করা কঠিন।’’
দেশে মন্দার আশঙ্কা নেই দাবি করেও জয়ন্ত বলছেন, ‘‘দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার যা হওয়া উচিত তার চেয়ে কম। অথচ মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি। এই সমস্যার মোকবিলা করা ঋণনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ।’’