নিজস্ব চিত্র।
ডিজিটাল পরিষেবা নিয়ে বহু দিন ধরেই চর্চা চলছে বিশ্বে। করোনাকালে তা আরও গতি পেয়েছে। এর কাঁধে ভর করে তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা ব্যবসার সম্ভাবনা বাড়ছে। কিন্তু সকলের কাছে কি পৌঁছচ্ছে সেই সুবিধা? সংশ্লিষ্ট মহল কিন্তু বলছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির নাগাল না পেয়ে করোনাকালেই শিক্ষা, কাজের মতো ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু। সেই প্রেক্ষিতেই সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উঠে এল ইনফোকমের মঞ্চে। পাশাপাশি শিল্পোদ্যোগ কিংবা গেমিং পরিষেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্ভাবনাও তুলে ধরলেন বিশেষজ্ঞেরা।
এবিপি গোষ্ঠী আয়োজিত প্রযুক্তি সম্মেলন ইনফোকম এ বার দু’দশক পূর্ণ করল। শনিবার সম্মেলনের শেষ দিনের অন্যতম আলোচ্য ছিল, সকলের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার সুযোগ। এরিকসন ইন্ডিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের এমডি অমিতাভ রায় অনলাইনে শিক্ষার বিস্তার, লেনদেন বৃদ্ধির উদাহরণ দেন। জানান, সমীক্ষা বলছে, ১০ বছরে ভারতীয় সফটওয়্যার ব্যবসা ১ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছবে। তৈরি হবে পাঁচ লক্ষ কাজের সুযোগ।
অথচ এই আশার আলোকরেখার সঙ্গেই আঁধারের তথ্যও স্পষ্ট। যেমন বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী, করোনাকালে বহু মানুষের কাজ হারানো, প্রায় ১৫ কোটি শিশুর স্কুলছুট হওয়া, মাধ্যমিক স্তরে ১৭% স্কুলছুট ইত্যাদি। অনেক নতুন সংস্থা (স্টার্ট-আপ) ব্যবসা শুরু করেছে। তাদের মধ্যে যাদের সম্পদের মূল্য ১০০ কোটি ডলার ছুঁয়েছে (ইউনিকর্ন) তাদের নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে। কিন্তু সমীক্ষা উল্লেখ করে অমিতাভবাবুর দাবি, প্রায় ৬০% স্টার্ট-আপ, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থা আবার হয় বন্ধ হয়েছে বা পুঁজির অভাবে ব্যবসা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে। দেশের প্রায় অর্ধেক জায়গায় ইন্টারনেট নেই। যাঁদের সেই সুযোগ আছে, তাঁদের মধ্যে আবার মাত্র ৩১ শতাংশের হাতে স্মার্টফোন। অর্থাৎ, সকলের কাছে পৌঁছচ্ছে না প্রযুক্তির সুযোগ। তিনি মনে করান, সকলের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারের যেমন দায় রয়েছে, তেমনই দায়িত্ব আছে শিল্পেরও।
এর মধ্যেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ও শিল্পোদ্যোগের পরিবেশ নিয়ে চর্চা হয় ইনফোকমের আর এক সভায়। সেখানে কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি ও স্টার্ট-আপ সংস্থার কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, উদ্ভাবনী ভাবনাকে উৎসাহিত করতে সরকারের খরচ করা জরুরি। প্রয়োজন লাল ফিতের ফাঁস আরও আলগা করাও। অন্য এক সভায় আলোচনা হয় ভারতে গেমিং ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে।