Inflation

Price Hike: মূল্যবৃদ্ধিতে অসহায় প্রবীণদের কেউ কাজ খুঁজছেন, কেউ ভাঙছেন সঞ্চয়

পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের মতে, অধিকাংশ প্রবীণদের চড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া অসম্ভব।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৫:৪৬
Share:

ফাইল চিত্র।

তাঁদের মাস মাইনে বলে কিছু নেই। কাজ থেকে অবসর নেওয়ার পরে অনেকেরই ভরসা শুধু জমানো টাকার সুদ। কিন্তু জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধ-সহ সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে সংসার খরচ এমন বেড়েছে যে, মাথায় হাত বহু বয়স্ক মানুষের। সঞ্চয় ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। শারীরিক ক্ষমতা কমলেও একাংশ কাজ খুঁজতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ আবার জীবনযাপনের যন্ত্রণা আঁচ করে অবসর নিতে সাহস পাচ্ছেন না।

Advertisement

অরিন্দম সেনগুপ্ত বেসরকারি সংস্থা থেকে অবসর নিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। বলছেন, ‘‘ফিক্সড ডিপোজ়িটের সুদের টাকায় আর চালাতে পারব না। বাড়িতে পড়ানো শুরু করেছি। অন্তত মাসে কিছু তো আসবে।’’ শ্রাবণী বিশ্বাস স্কুলে পড়াতেন। তিনি জানান, ‘‘ওষুধের খরচই চালাতে পারছি না। গ্যাস বাঁচাতে ডাল-ভাত খাই। তাতে খরচ বাঁচে। তা-ও হাত দিতে হয়েছে ব্যাঙ্ক-ডাকঘরের সঞ্চয়ে। বড় রোগ হলে কী হবে, ভাবতেই ভয় লাগে।’’

দিল্লি হাইকোর্টের টি এল ওয়ালির ৬৬ বছর বয়স। ঠিক করেছেন কাজ করে যাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘অবসর জীবনের কথা ভাবতেই পারছি না।’’ ওয়ালির মতো অনেকেই এখন আর ফল খান না। বেড়াতে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যাওয়াও কমিয়েছেন। হিসাব করে দেখেছেন, যে টাকা দিয়ে স্বচ্ছন্দে অবসর জীবন কাটবে ভেবেছিলেন, তার প্রকৃত মূল্য এখন অর্ধেক বা তারও কম।

Advertisement

আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, অবসরপ্রাপ্তদের সিংহভাগেরই আয়ের সূত্র ব্যাঙ্কের সুদ। বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৭৯%। কিন্তু ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতে সুদের হার তার কম। তাই সুদের আয় থেকে মূল্যবৃদ্ধিকে বাদ দিলে প্রকৃত আয় এখন শূন্যের নীচে। সম্প্রতি আরবিআই সুদ বাড়ালেও জমায় এখনও তার তেমন প্রতিফলন নেই। অথচ ইএমআইয়ের বোঝা বেড়েছে। যাঁদের আয়ের অন্যতম উৎস বাড়ি ভাড়া, তাঁরাও সঙ্কটে। কারণ, তা বাড়ছে না।

পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের মতে, অধিকাংশ প্রবীণদের চড়া মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া অসম্ভব। ফলে তাঁরা অসহায়। কারণ, বহু দেশে তাঁরা যেমন সরকারি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পান, তেমন ভারতে নেই। ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞ বি কে দত্তের দাবি, “আমার অনেক প্রাক্তন সহকর্মী অবসর নেওয়ার সময় যে পেনশন পেতেন, তাতে ভাল ভাবে সংসার চলে যেত। কিন্তু এখন সেই টাকার প্রকৃত মূল্য অনেক কম। অনেকেই চিকিৎসার খরচ কমাতে পারছেন না বলে অন্যান্য চাহিদা ছাঁটছেন। ভুগছেন সামাজিক নিরপত্তাহীনতায়।’’ ব্যাঙ্কের সুদের বিকল্প শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর বক্তব্য, হালে শেয়ারে লগ্নি অনিশ্চয়তায় ভরা। ঋণপত্র ভিত্তিক প্রকল্পে লগ্নি করলে অল্প ঝুঁকিতে কিছু বেশি আয় হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement