—প্রতীকী ছবি।
স্বাধীনতার ১০০ বছরের মধ্যে সমস্ত ভারতবাসীকে বিমার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি এক নির্দেশিকা (মাস্টার সার্কুলার) জারি করে বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ জানিয়েছে, জীবন বিমা-সহ সমস্ত বিমা সংস্থাকে তাদের ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ভাবে গ্রামাঞ্চল এবং সামাজিক ক্ষেত্রে রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মোদী সরকার ২০৪৭ সালের মধ্যে সব নাগরিককে বিমাকৃত করার কথা বললেও বিমা সংস্থাগুলি নিজেরা গ্রামাঞ্চলে পরিকাঠামো প্রসারে তেমন উদ্যোগী হচ্ছে না। সেই কারণেই কেন্দ্র তাদের জন্য বাধ্যতামূলক কিছু মাপকাঠি তৈরি করতে চাইছে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রত্যেক জীবন বিমা সংস্থাকে তাদের বিমার নির্দিষ্ট একটি অংশ গ্রামাঞ্চলে করাতে হবে। তার জন্য কিছু পঞ্চায়েত চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে লাইফ ইনশিয়োরেন্স কাউন্সিল এই সমস্ত পঞ্চায়েতকে চিহ্নিত করবে। কোন সংস্থাকে ক’টি পঞ্চায়েত এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হবে তা ঠিক করা হবে বিমা বাজারে কার কতটা দখল আছে কিংবা অন্য কোনও মাপকাঠির ভিত্তিতে। তালিকা তৈরির পরে তা জানিয়ে দেওয়া হবে আইআরডিএ-কে। একই ভাবে স্বাস্থ্য বিমা-সহ সাধারণ বিমা সংস্থাগুলির ক্ষেত্রের পঞ্চায়েত চিহ্নিত করা হবে জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে। বিমা মহলের বক্তব্য, সারা দেশে এখন ৪০টি সাধারণ বিমা সংস্থা সক্রিয় রয়েছে। আবার দেশে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা আড়াই লক্ষ। এদের নিয়ে একটি সংগঠিত কাঠামো তৈরি করা গেলে বিমার প্রসারে আরও গতি আসবে।
এসবিআই লাইফ ইনশিয়োরেন্সের প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর অতনু সেনের ব্যাখ্যা, ‘‘ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক সংস্থাগুলিকে তাদের মোট ঋণের ন্যূনতম একটি অংশ কয়েকটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে দিতে হয়। বিমা সংস্থাগুলি যাতে গ্রামাঞ্চলেও বাধ্যতামূলক ভাবে ব্যবসা বাড়ায়, তার জন্য খানিকটা সেই ধাঁচে উদ্যোগ নেওয়া হল। এত দিন তাদের গ্রামাঞ্চলের মানুষদের বিমাকৃত করার আবেদন জানানো হত। এ বার সেই গতি বাড়ানোর জন্য একটি সংগঠিত ব্যবস্থা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হল।’’ বিমা বিশেষজ্ঞ এন বাঞ্চুর জানান, ‘‘গ্রামাঞ্চলে এমন অনেক গাড়ি আছে যেগুলি কেনার সময়ে বিমা করা হয়েছিল। তার পরে পুনর্নবীকরণ করানো হয়নি। এগুলিকে ফের বিমার আওতায় নিয়ে আসা দরকার। কোন কোন গাড়িতে বিমা নেই, সেই তথ্য ইনশিয়োরেন্স ইনফর্মেশন ব্যুরোর মাধ্যমে পাওয়া যাবে।’’ এলআইসির প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা অরূপ দাশগুপ্তের বক্তব্য, এত দিন গ্রামে বিমা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দিত সংস্থা। চলতি অর্থবর্ষ থেকে আইআরডিএ তা সরাসরি পঞ্চায়েতের কাছ থেকে পাবে। তাতে পরিসংখ্যানে স্বচ্ছতা বাড়বে।