ফাইল চিত্র।
কলকাতা-সহ রাজ্যের ১০ জেলায় প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) জোগানের পরিকাঠামো ধাপে ধাপে গড়ে উঠছে। বেশ কিছু অঞ্চলে ইতিমধ্যেই গাড়ির জ্বালানি হিসাবে পাম্পে তা বিক্রিও শুরু করেছে তিন সংস্থা। এ বার আরও বিস্তৃত হচ্ছে সেই ব্যবস্থা। যার পরের ধাপে আরও সাতটি জেলায় রাষ্ট্রায়ত্ত দুই সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসিএল) এবং ভারত পেট্রলিয়ামকে (বিপিসিএল) সম্প্রতি এই গ্যাস বণ্টনের বরাত দিয়েছে এই ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক পিএনজিআরবি। সেই লক্ষ্যে আরও চার জেলায় নতুন দরপত্রও চেয়েছে তারা।
রাজ্যে শিল্পোৎপাদন, গাড়ির জ্বালানি এবং বাড়ি-হোটেল-রেস্তরাঁয় রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগানের জন্য গেলের সঙ্গে চর্চা শুরু হয় ২০০৫ সালে। মাঝে নানা জটে থমকে গেলেও উত্তরপ্রদেশ থেকে গেলের পাইপলাইন আপাতত এসেছে দুর্গাপুর পর্যন্ত। ধামড়া থেকেও হলদিয়া এবং উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইন গড়ছে গেল। বর্ধমান, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, হাওড়া হুগলি, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস বণ্টনের বরাত পেয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল আদানি গ্যাস (আইওএজিপিএল), হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং গেল ও গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের যৌথ সংস্থা বেঙ্গল গ্যাস (বিজিসিএল)। আপাতত বর্ধমানে এসার গোষ্ঠীর কাছে থেকে গ্যাস কিনে বণ্টন সংস্থাগুলিকে দিচ্ছে গেল। তারা ‘কাসকেড’-এ করে তা এনে সিএনজি পাম্পে তা বিক্রি করছে। পাশাপাশি গেলের পাইপলাইন থেকে জোগান শুরুর আগে তিনটি সংস্থাই বাড়ি-হোটেলেও রান্নার জ্বালানি হিসাবে পাইপলাইনে গ্যাস জোগানের পরিকাঠামো গড়ছে।
বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস বণ্টনের বরাত দিতে একাধিক দফায় দরপত্র চেয়েছিল পিএনজিআরবি। একাদশতম দফার নিলামে আরও অনেক সংস্থার সঙ্গে বরাত জিতেছে আইওসিএল এবং বিপিসিএল। এ রাজ্যে বিপিসিএল এই প্রথম বরাত পেল। সংস্থা জানিয়েছে, তিন-ছ’মাসের মধ্যে তারা গেলের গ্যাস পেতে নিজেদের পাইপলাইন তৈরির কাজ শুরু করবে। তবে বাণিজ্যিক ভাবে গ্যাস বিক্রি শুরু করতে পরের বছরের শেষের দিক হয়ে যেতে পারে।
এর পরের ধাপে গ্যাস বণ্টনের পরিকাঠামো গড়তে পিএনজিআরবি যে দরপত্র চেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এ রাজ্যের আরও চার জেলা বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুর। সূত্রের খবর, সেই পর্ব মিটলে পুরো রাজ্যই গ্যাস-গ্রিডের আওতায় আসবে। তখন শুধু অপেক্ষা ধাপে ধাপে ক’বছরে সেই সব এলাকায় গ্যাসের বিক্রি শুরু হওয়ার। রাজ্যের সর্বত্র জোগান শুরু হলে সস্তার এই জ্বালানি অর্থনীতিতে আরও গতি আনবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।