Investment

সুদ না-কমায় একটু স্বস্তি, লগ্নিকারীর চিন্তা বন্ড ইল্ড

খুচরো ও পাইকারি, এই দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হার লক্ষ্যমাত্রার বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৬.৩%।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৫:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রবীণ নাগরিক-সহ সুদ নির্ভর মানুষেরা আশঙ্কায় ছিলেন। তবে এই দফায় তাঁদের স্বস্তি দিয়ে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার কমানো হয়নি। গত ৩১ মার্চ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজ্ঞপ্তি ফিরিয়ে নিয়েছিল কেন্দ্র। তখন পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজেছে। সাধারণ মানুষের প্রমাদ গোনা শুরু সেই সময় থেকেই। কারণ, সুদ কমানোর বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের কারণ যে ভোটের বালাই, সেটা স্পষ্ট ছিল। ফলে ভোট মিটলে জুলাইয়ে সুদ ছাঁটার আশঙ্কা থেকেই যায়। ভোট মরসুমে তেলের দাম কমা এবং তার পরে লাগাতার বৃদ্ধিও সেই ভয় বাড়িয়েছিল।

Advertisement

বাস্তবে অবশ্য সুদ কমানোর পরিস্থিতিও নেই। খুচরো ও পাইকারি, এই দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হার লক্ষ্যমাত্রার বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৬.৩%। তবে বাজারে গেলে মনে হবে তা আরও অনেক বেশি। যার প্রধান কারণ তেলের লাগামছাড়া দাম। পেট্রল বাড়তে বাড়তে পশ্চিমবঙ্গ সমেত বহু রাজ্যে লিটারে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। ফলে যাতায়াতের খরচ বাড়ছে। ডিজেলের দামও সেঞ্চুরির পথে হাঁটার প্রভাব পড়ছে কৃষি, পণ্য পরিবহণ এবং পর্যটন শিল্পে। যা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। তার উপরে দাম বেড়েছে রান্নার গ্যাসের। আশঙ্কা, এতে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও মাথা তুলবে। এই অবস্থায় পিপিএফ, এনএসসি, এমআইএস, সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস স্কিম ইত্যাদি প্রকল্পে সুদ কমানোর প্রশ্নই ওঠে না।

তবে বন্ডের ইল্ড ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় উদ্বিগ্ন বন্ড এবং বন্ড ফান্ডের লগ্নিকারীরা। ইল্ড বাড়ার অর্থ বাজারে বন্ডের দাম কমা। অর্থাৎ বন্ডে লগ্নিকারীদের খাতায়-কলমে লগ্নিমূল্য কমে আসা। গত মার্চে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ড ইল্ড পৌঁছেছিল ৬.২৫ শতাংশে। পরে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপে তা নামে ৬ শতাংশের নীচে। গত সপ্তাহে এই ইল্ড বেড়ে স্পর্শ করেছে ৬.০৬%। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, চলতি বছরে তা বেড়ে ৬.৫০% পর্যন্ত হতে পারে। এ বছর বাজার থেকে মোটা টাকা ধার করতে হবে কেন্দ্রকে। ফলে বেশি বন্ড ছাড়লে বাজারে তার দাম কমবে, ইল্ড বাড়বে। যেটা বাঞ্ছনীয় নয়।

Advertisement

গত সপ্তাহে ৬.২৯ লক্ষ কোটি টাকার নতুন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। আগের মতো এটিও মূলত ঋণ নির্ভর হওয়ায় অখুশি শেয়ার বাজার। গত সপ্তাহে পাঁচটি কাজের দিনের মধ্যে চারটিতেই নেমেছে সূচক। সেনসেক্স খুইয়েছে মোট ৪৪০ পয়েন্ট।

তার উপর অর্থনীতির পরিসংখ্যানগুলি এখনও নিশ্চিন্ত করতে পারছে না। মে মাসে দেশের মূল আটটি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ১৬.৮% হারে। কিন্তু বাস্তবে গত বছরের নিচু ভিতের তুলনায় উঁচু দেখাচ্ছে। আইএইচএস মার্কিটের তথ্য বলছে, জুনে কারখানার উৎপাদন সূচক নেমেছে ৪৮.১ পয়েন্টে। এই সূচক ৫০-এর নীচে মানে, সঙ্কোচন। অর্থাৎ জুনে কল-কারখানায় উৎপাদন সঙ্কুচিত হয়ে তলিয়ে গিয়েছে ১১ মাসের নীচে। জুনে রফতানি ৪৭.৩৪% বেড়ে ৩২৪৬ কোটি ডলার হওয়াতেও সেই নিচু ভিতের নিরিখে উঁচু হারের ছবিটাই স্পষ্ট।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement