ফাইল চিত্র।
শুধু আমজনতা নয়, দামের চাপ সইতে পারছে না দেশের শেয়ার বাজারও। গত বৃহস্পতিবার ঘোষিত হয় এপ্রিলে ৭.৭৯% খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। মুখ থুবড়ে পড়ে সূচক। ১১৫৮ পয়েন্ট খুইয়ে সেনসেক্স নামে ৫২,৯৩০ অঙ্কে। এরই মধ্যে বেরোতে শুরু করেছে বিভিন্ন সংস্থার জানুয়ারি-মার্চের আর্থিক ফল। আশা, বেশিরভাগের আয়-মুনাফা ভাল হলে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে পারে।
শেয়ার বাজার পড়ছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে সুদে তারা ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) ৪০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর পর থেকেই। লগ্নিকারীদের আশঙ্কা, সুদ বৃদ্ধি চাহিদা কমিয়ে অর্থনীতির অগ্রগতি আটকাবে। মূল্যবৃদ্ধির বহর দেখে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সকলের ধারণা, আরও বাড়বে সুদ এবং নগদ জমার অনুপাত (সিআরআর)। যাতে বাজারে নগদের জোগান কমে গিয়ে চাহিদাকে দুর্বল করে এবং মূল্যবৃদ্ধিকে নীচের দিকে ঠেলে দেয়। যে চাহিদায় ভর করে অর্থনীতি অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে আশা ছিল, তাকেই এ ভাবে টেনে নামানোর বাধ্যবাধকতায় হতাশ সেনসেক্স। গত ছ’টি লেনদেনে খুইয়েছে ২৯০৯ পয়েন্ট। রেকর্ড থেকে নেমেছে প্রায় ৯০০০ (১৪.৫%)। সুদ বাড়ায় বাড়ছে বন্ড ইল্ড। পড়ছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম।
এই অবস্থায় কিছু খবর অর্থনীতির সম্পর্কে আশা তৈরি করছে। যেমন— এপ্রিলে ১.৬৮ লক্ষ কোটি টাকার রেকর্ড জিএসটি আদায়। রফতানির ২৪.২% বেড়ে ৩৮২০ কোটি ডলার হওয়া। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে কিছু সংস্থার ভাল ফল। অন্য দিকে, কিছু খবর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। যেমন—
মূল্যবৃদ্ধি যখন মাথা তুলছে, তখন শিল্প বৃদ্ধি শ্লথ। মার্চে ১.৯%। ০.৯% বেড়েছে কল-কারখানায় উৎপাদন। বেকারত্ব চড়া। গাড়ি বিক্রি ঢিমে।
তবে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো। সে জন্য শুধু চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করলে হবে না। কমাতে হবে তেলের দর। বিশেষজ্ঞের একাংশের মতে, জিএসটি এতটা বাড়ায় কিছুটা ভর্তুকি দিয়ে বা উৎপাদন শুল্ক ছেঁটে কেন্দ্র তেলের দাম কমাক। বিশেষত ভারত এখন রাশিয়া থেকে কম দামে অশোধিত তেল আমদানি করছে। সাশ্রয় হচ্ছে সেখানেও।
গত সপ্তাহে ভাল ফল প্রকাশ করেছে কিছু সংস্থা। গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্কের নিট লাভ বেড়ে হয়েছে ৯১১৩ কোটি টাকা। অনুৎপাদক সম্পদ কমেছে ১%। টেক মহীন্দ্রার লাভ ৩৯% বেড়েছে। ৮৮ কোটি থেকে বেড়ে ইমামির লাভ পৌঁছেছে ৩৫৪ কোটিতে। বন্ধন ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা পেরিয়েছে ১৯০০ কোটি। ব্যাঙ্ক অব বরোদার ক্ষেত্রে তা ১৭৭৯ কোটি টাকা। তার আগের বার ১০৪৭ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। ইউকো ব্যাঙ্কের লাভও বেড়ে হয়েছে ৩১২ কোটি টাকা।
(মতামত ব্যক্তিগত)