—প্রতীকী ছবি
কেয়ার্ন এনার্জির কাছে ভারত সরকার পুরনো লেনদেন বাবদ করের (রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্স) যে দাবি করেছিল, সম্প্রতি খারিজ করেছে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে ফের আইনি পদক্ষেপ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, নেদারল্যান্ডসের ওই আদালতে মামলার ৫৮২ পাতার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে পুরনো লেনদেনের কর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কিছু বক্তব্য। ইঙ্গিত করা হয়েছে, ওই কর নিয়ে না এগোনোরই বার্তা দিয়েছিলেন তাঁরা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই পরিস্থিতিতে আবারও আইনি পথে হাঁটলে ফের অস্বস্তির মুখে পড়তে হবে না তো কেন্দ্রকে?
রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালে জেটলি তাঁর প্রথম বাজেট বক্তৃতায় জানান, রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্সের দাবি নিয়ে প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তবে শুধুমাত্র ২০১২ সাল পরবর্তী দাবিগুলিই খতিয়ে দেখা হবে। ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর তিনি ফের ইঙ্গিত করেন, পুরনো কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করবে না কেন্দ্র। ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি বক্তব্য তুলে ধরে দাবি করা হয়েছে, স্বচ্ছ কর ব্যবস্থার পক্ষে বলতে গিয়ে রেট্রোস্পেকটিভ ট্যাক্সের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেন তিনিও।
একই সঙ্গে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইস্তাহারের প্রসঙ্গও। মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৎকালীন বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি কী ভাবে ইউপিএ সরকারের ওই কর নীতির সমালোচনা করেছিল।
বিতর্ক যেখানে
• ২০০৬ সালে কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে ভারতে নিজেদের সম্পত্তি বিক্রি করে কেয়ার্ন এনার্জি।
• ২০১৫ সালে কেয়ার্ন এনার্জিকে ১০,২৪৭ কোটি টাকার করের নোটিস পাঠায় আয়কর দফতর। তা পাঠানো হয় পুরনো লেনদেনের উপরে করের সংশোধিত বিধি মেনে।
• সে বছরই ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যায় কেয়ার্ন এনার্জি।
• সালিশি চলাকালীনই বেদান্তে কেয়ার্ন এনার্জির শেয়ার বিক্রি করে, ডিভিডেন্ড আটকে এবং ফেরতযোগ্য কর আটকে বকেয়া করের বেশি কিছুটা তুলে নেয় কেন্দ্র।
সালিশি আদালতে
• আদায় করা কর, সুদ এবং মামলার খরচ মিলিয়ে কেয়ার্ন এনার্জিকে ১০,৫০০ ফেরত দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ সালিশি আদালতের।
• তিন সদস্যের সালিশি কমিটি যে সমস্ত যুক্তি দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যও।