সম্প্রতি নোট বাতিলের জেরে ব্যাঙ্কের ঘরে মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়ার পথ প্রশস্ত করবে না। শুক্রবার এই মন্তব্য করলেন অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর রাজীব আনন্দ। তাঁর মতে, যে টাকা জমা পড়েছে, তা সেভিংস এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্টে। ফলে ওই টাকা যে-কোনও সময়েই তুলে নিতে পারেন গ্রাহক। তাই তার ভিত্তিতে লম্বা সময়ের জন্য সুদ কম থাকবে, এমন ভেবে নেওয়া শক্ত।
সম্প্রতি কেন্দ্র পাঁচশো, হাজারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ব্যাঙ্কের সেভিংস এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্টে নজিরবিহীন ভাবে মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়েছে। সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদের হার খুবই কম। কারেন্ট অ্যাকাউন্টে তো তা দেওয়া হয় না। এর ফলে এক দিকে ব্যাঙ্কের হাতে যেমন অতিরিক্ত তহবিল এসেছে, তেমনই কমেছে তহবিল সংগ্রহের খরচ। সাধারণত এই সংগ্রহের খরচ কমলেই সুদ কমার একটা জায়গা তৈরি হয়। পাশাপাশি ঋণ দেওয়ার তাগিদও বাড়ে। সম্প্রতি বেশ কিছু ব্যাঙ্ক সুদ অনেকখানি কমিয়েওছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, তা স্বল্প মেয়াদে। রাজীববাবুরও বক্তব্য, কম মেয়াদে সুদের হার কমতেই পারে। কারণ, বর্তমানে তহবিল সংগ্রহের খরচের ভিত্তিতে ওই হার (এমসিএলআর) ঠিক করার নিয়ম চালু হয়েছে। ওই নিয়মে অল্প সময়ের ব্যবধানে সুদের হার পুর্নবিবেচনা করা হয়। এখন অতিরিক্ত তহবিল রয়েছে। তাই অনেক ব্যাঙ্কই কমিয়েছে সুদের হার। কিন্তু ওই টাকা গ্রাহকরা তুলে নিলে ফের সুদের হার বাড়তে পারে মনে করছেন অ্যক্সিস ব্যঙ্কের ওই কর্তা। কারণ নোট বাতিলের হাত ধরে যে টাকা ব্যাঙ্কে ঢুকেছে, তা দিয়ে না দেওয়া যাবে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ, না কমানো যাবে সুদ।
রাজীববাবুর ধারণা, যে টাকা সম্প্রতি ব্যাঙ্কের ঘরে ঢুকেছে, তার একটা বড় অংশই গ্রাহকরা কিছু দিনের মধ্যে তুলে নেবেন। কতটা টাকা শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে থাকবে, তা আগামী মার্চের মধ্যেই বোঝা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ দিকে নোট কান্ডের পরে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কে অনলাইন লেনদেন দ্রুত বেড়েছে বলে জানান রাজীববাবু। বর্তমানে তাঁদের ৫৪% লেনদেনই অনলাইনে হচ্ছে। ৩৪% হচ্ছে এটিএমে। মাত্র ১২% লেনদেন ব্যাঙ্কে গিয়ে করছেন গ্রাহকরা। তবে এটিএমের মাধ্যমে লেনদেন বাড়লেও তার খরচ কমানোর কোনও সম্ভাবনা এখন আছে বলে মনে করেন না রাজীববাবু। আগের মতো গ্রাহক যে-ব্যঙ্কে তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেখানে ৫টি এবং অন্য ব্যাঙ্কে ৩টি লেনদেনই কেবল বিনা খরচে করতে পারবেন। এর বেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে আগের মতোই গুনতে হবে খরচ।