প্রতীকী ছবি।
অর্থবর্ষ শেষের দিনেই ভয় বাড়ল অর্থনীতি নিয়ে। বুধবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান জানাল, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আরও সঙ্কুচিত হয়েছে পরিকাঠামো ক্ষেত্র। যার হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৬%। তার উপরে এই সঙ্কোচন তার আগের ছ’মাসের মধ্যে সব থেকে বেশি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়া উৎপাদন ফেব্রুয়ারিতে গোটা শিল্পের উৎপাদনকেই শূন্যের অনেক নীচে টেনে নামাতে পারে। কারণ শিল্পোৎপাদনে এই ক্ষেত্রগুলির ভূমিকা অনেকখানি।
কয়লা, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে পেট্রোপণ্য, ইস্পাত, সিমেন্ট, সার, বিদ্যুৎ— পরিকাঠামো ক্ষেত্রের প্রধান সমস্ত ক্ষেত্রের উৎপাদনই কমে গিয়েছে গত ফেব্রুয়ারিতে এবং অনেকগুলিতেই বেশ চোখে পড়ার মতো হারে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই সঙ্কোচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, ভারতের লকডাউনের আগের অবস্থায় ফিরে যেতে এখনও ঢের দেরি। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পরিকাঠামো ক্ষেত্র বৃদ্ধি দেখেছিল ৬.৪%। এ দিন সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আবহে বিভিন্ন মঞ্চ থেকে বারবার অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে যে বার্তা দিচ্ছেন কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরা, তার সারবত্তা কতটুকু?
করোনার আবহে দীর্ঘ দিন ধরে সঙ্কোচনের পরে সেপ্টেম্বরে ০.৬% (সংশোধিত) বৃদ্ধি দেখেছিল দেশের আটটি মূল পরিকাঠামো ক্ষেত্র। পরের তিন মাস সেই বৃদ্ধি উধাও হয়। ফিরে আসে ফের জানুয়ারিতে, মাত্র ০.৯% বৃদ্ধির হারে ভর করে। কিন্তু সেই ফেরাও যে নিশ্চিন্তির শুরু ছিল না, ফেব্রুয়ারিতে আরও একবার স্পষ্ট হল। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, প্রথম দফায় অতিমারির সংক্রমণ কিছুটা স্তিমিত হওয়ায় এবং বাজারে প্রতিষেধক প্রয়োগ শুরু হয়ে যাওয়ায় বরং উল্টোটাই আশা করা হয়েছিল। যদিও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এবং ভাইরাসের নিত্যনতুন স্ট্রেন পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলবে কি না, এ বার নতুন করে সেই আশঙ্কাই মাথা তুলেছে।
বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যান জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ আজ শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবর্ষের ১১ মাসে আট পরিকাঠামো ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হয়েছে মোট ৮.৩%। যেখানে আগের অর্থবর্ষের একই সময় সামান্য হলেও বৃদ্ধির হার ছিল ১.৩%। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, আরও কমতে পারে উৎপাদন। কারণ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এসে লেগেছে দেশে। বহু জায়গায় ফের কড়া বিধিনিষেধ বসছে বিচ্ছিন্ন ভাবে। তবে উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের দাবি, মার্চে তা বাড়তে পারে ৯-১১%।