অতিমারি গোটা পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে। তার অভিঘাত কাটিয়ে এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় শিল্প, বাণিজ্য-সহ সমস্ত প্রতিষ্ঠান। সর্বোপরি সাধারণ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কোভিড শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বৃহত্তম সঙ্কট ছিল না। জীবন ও জীবিকার মধ্যে কোনটির গুরুত্ব বেশি, সেই প্রশ্নও তুলে দিয়েছিল। তবে এই অবস্থাতেও যাবতীয় বাধা-বিপত্তিকে পিছনে ফেলে এগিয়েছেন অনেকে। প্রতিকূল পরিস্থিতিকে করে তুলেছেন নেতৃত্বের মঞ্চে নিজেদের পৌঁছনোর প্রধান অস্ত্র। সেই প্রেক্ষাপটেই আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে এবিপি গোষ্ঠী আয়োজিত এ বছরের ইনফোকম। সহযোগী হিসেবে থাকবে রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর এবং ওয়েবল।
২০০২ সালে শুরু হওয়া তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের এই রাজসূয় যজ্ঞের এ বার ২১তম বছর। করোনা পরিস্থিতির জন্য গত দু’বছর ইনফোকম হয়েছিল অনলাইনে। এ বছর তা ফিরছে সাবেক কাঠামোয়। আজ কলকাতার আইটিসি সোনার হোটেলে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি। গত দু’বার সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা করোনাজনিত সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজেছিলেন। এ বারের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্য পথে হেঁটে পথের দিশা দেখানো সফল নেতৃত্বকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে ইনফোকম। বুঝতে চেষ্টা করা হবে তাঁদের কৌশল ও লড়াইকে। সকলের সামনে তুলে ধরা হবে পরিবর্তনের কান্ডারিদের সেই সাফল্য। এ বছর সম্মেলনের প্রতিপাদ্য তাই ‘দি এজ অব চেঞ্জ মেকার্স’ বা পরিবর্তন নির্ধারকদের যুগ। উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
ইনফোকম অনেক আগেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী ভাবনা, ব্যবসায়িক কৌশলের দিশা দেখানোর মঞ্চে পরিণত হয়েছে। গত বছর যেমন, সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘অ্যাকসেলারেটিং ডিজিটাল’। অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তিকে বেশি করে কাজে লাগিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার বার্তা। আর ঘটনাচক্রে আজই খুচরো লেনদেনের জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে ডিজিটাল মুদ্রা ই-রুপি চালু করতে চলেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
ইনফোকম ২০২২-এ তথ্যপ্রযুক্তি, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প, সরকার-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল থেকে যোগ দেবেন ১০০০ জন প্রতিনিধি। ৫০টির বেশি আলোচনাসভায় থাকবেন ১০০ জনেরও বেশি বক্তা।
এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও ধ্রুব মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘অতিমারি আমাদের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন বদলে দিয়েছে, তেমনই প্রভাব ফেলেছে ইনফোকমের উপরেও। তা সত্ত্বেও এই সম্মেলন আমরা বন্ধ রাখিনি। গত দু’বছর তা করেছি ডিজিটাল মাধ্যমে। আর এ বার ফিরিয়ে এনেছি আগের কাঠামোয়। ঘটনাচক্রে সেই সুযোগ পাওয়া গিয়েছে এবিপি গোষ্ঠীর শতবর্ষেই। আমাদের আশা, এই তিন দিনে দেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য আমরা শক্তিশালী পথনির্দেশিকা তৈরি করতে পারব।’’