প্রতীকী ছবি।
পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ডিসেম্বরে তার আগের মাসের থেকে সামান্য কমে ১৩.৫৬% হলেও, উদ্বেগ আরও বাড়ল। শুক্রবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, ক্রমশ মাথা তুলছে খাদ্যপণ্যের দাম। ডিসেম্বরে সেখানে তার হার ৯.৫৬% ছুঁয়ে প্রায় দু’বছরের মধ্যে সব থেকে উঁচুতে পৌঁছে গিয়েছে।
সম্প্রতি খুচরো বাজারের তথ্য আসার পরে দেখা যায়, গত মাসে খাদ্য সামগ্রী কিনতে ক্রেতার খরচ আগের থেকে বেশ খানিকটা বেড়েছে বলেই মূলত ৫.৫৯ শতাংশে পৌঁছেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। আন্তর্জাতিক অর্থনীতি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্টেও ভারতে আচমকা খাদ্যপণ্যের মূলবৃদ্ধির মাথা তোলা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের সতর্কবার্তা, এর ফলে আগামী দিনে এ দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা নষ্ট হবে, মানুষের প্রকৃত আয় কমবে এবং সেই সঙ্গে বাড়বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা।
নভেম্বরে পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১৪.২৩%। টানা চার মাস নাগাড়ে মাথা তোলার পরে ডিসেম্বরে তা সামান্য নেমে হয়েছে ১৩.৫৬%। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, গত এপ্রিল থেকে টানা ন’মাস ১০ শতাংশের উপরে থাকা এই মূল্যবৃদ্ধির হার কমলেও স্বস্তি পাওয়ার কোনও জায়গা নেই। সব কিছু দরই বেশ চড়া। তার উপরে খুচরো বাজারেও জিনিসের দাম বাড়ছে। বাড়তি উদ্বেগ খাদ্যপণ্য। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সরবরাহের সমস্যাই এর প্রধান কারণ।
তবে এর আশু সমাধান দেখছেন না কেউই। বিশেষত তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রাজ্যের কড়া বিধিনিষেধে জোগান-শৃঙ্খল ফের ধাক্কা খেলে দাম আরও চড়ার আশঙ্কা থাকছেই, মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার এক লাফে ২৩ মাসের সর্বাধিক হওয়া অস্বস্তিজনক, ইঙ্গিত উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের। ফেব্রুয়ারির ঋণনীতিতেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার স্থির রাখবে বলে মনে করছেন তিনি। অ্যাকুইট রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান অ্যানালিটিক্যাল অফিসার সুমন চৌধুরীর দাবি, জ্বালানি বা কারখানায় তৈরি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কমার যে হিসাব আপাতদৃষ্টিতে স্বস্তির মনে হচ্ছে, সেটাও সাময়িক। কারণ, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ফের বাড়ছে। সরবরাহের সমস্যা, কাঁচামালের ঘাটতি এবং চড়া পণ্যের দাম বহাল থাকার কারণে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য এবং জ্বালানি বাদে বাকি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হারও উঁচু থাকবে বলেই সতর্ক করেছেন তিনি।