ফাইল চিত্র।
গত মাসের শেষে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই আশঙ্কা দানা বাঁধছিল। তা সত্যি করে ফেব্রুয়ারিতে ফের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬ শতাংশের সহনসীমা ছাড়িয়ে গেল খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। সোমবার সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, মূলত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার ফলেই সেই হার ছুঁয়েছে ৬.০৭%। আট মাসে যা সব চেয়ে বেশি। জানুয়ারিতে ছিল ৬.০১%। আর তার আগে গত বছর জুনে ৬.২৬%। এ দিকে আবার পাইকারি বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও, অশোধিত তেলের চড়া দরের জেরে গত মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছে গিয়েছে ১৩.১১ শতাংশে। বছরের প্রথম মাসে ছিল ১২.৯৬%। চলতি অর্থবর্ষের পুরোটা জুড়েই এই হার থাকল ১০ শতাংশের উপরে।
ভারত-সহ সারা বিশ্বে গত বছরের শেষ দিক থেকেই বাড়ছিল জিনিসপত্রের দাম। যা যুঝতে আমেরিকার ফেডারাল রিজ়ার্ভ থেকে শুরু করে ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। এরই মধ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ। যার ফলে বিশ্ব বাজারে কার্যত দৌড়চ্ছে অশোধিত তেলের দাম। ভারতে এখনও পর্যন্ত পেট্রল-ডিজ়েলের দামে তার প্রভাব না-পড়লেও, আগামী দিনে তা পড়ার আশঙ্কা থাকছে। সেটা হলে তখন খাদ্যপণ্য-সহ জিনিসপত্রের দামও আর বেলাগাম হবে। ফলে মানুষের ভোগান্তি যে বাড়বে, তা নিয়ে প্রায় একমত সংশ্লিষ্ট মহল।
এই পরিস্থিতিতে মার্চেও পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ১৩-১৪ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে বলেই মত ইক্রার মুখ্য অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের। তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি, পণ্যের জোগান ও তেলের দামের মতো বিষয়ই আগামী দিনে সেই দামের গতিপথ স্থির করবে। তবে এপ্রিলের ঋণনীতিতে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা এখনই তৈরি হয়নি বলেও তাঁর মত।
অনেক বিশেষজ্ঞ আবার বলছেন, বাজারে চাহিদা ফেরার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যার হাত ধরে ধাতু, তেল, সারের মতো পণ্যের দাম বাড়ছে। তার উপরে গ্রীষ্মে অশোধিত তেলের দর মাথা নামালে এবং সরবরাহ সমস্যা মিটলে নেমে আসবে মূল্যবৃদ্ধি। কিন্তু তা পরের অর্থবর্ষের জন্য শীর্ষ ব্যাঙ্কের ৪.৫% মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।