—ফাইল চিত্র।
সবেমাত্র বিক্রিবাটা বাড়ছিল। প্রাক-কোভিড যুগের মতো না-হলেও, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে শপিং মলগুলিতে ৮০-৯০ শতাংশই বিক্রি হয়েছিল। এর মধ্যে ফের রাজ্যে রাজ্যে কার্ফু বা লকডাউন শুরু হওয়ায় আতঙ্কিত শিল্পমহলের বার্তা, মোদী সরকার যেন কোভিডের মোকাবিলা এবং অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার মধ্যে ভারসাম্য রেখে এগোয়।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গতকালই সারা দিন ধরে আলাদা আলাদা ভাবে ফোনে কথা বলে শিল্পমহলকে আশ্বস্ত করেছেন, সরকার এই দুইয়ের ভারসাম্য রেখেই এগোতে চাইছে। বিভিন্ন বণিকসভার কর্তা, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র ও বড় শিল্প সংস্থার প্রধানদের কাছে তাঁদের সমস্যার কথাও জানতে চেয়েছেন। শিল্পকে জানিয়েছেন, মানুষের ‘জীবন’ ও ‘জীবিকা’-র রক্ষায় কেন্দ্র রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে।
দেশ জুড়ে কড়া লকডাউনের কথা ভাবছে না কেন্দ্র, আগেই জানিয়েছিলেন নির্মলা। কিন্তু শিল্পমহলের মতে, জাতীয় স্তরে না-হলেও রাজ্য স্তরের লকডাউনেই অর্থনীতির গতি রুদ্ধ হতে পারে। পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফের গ্রামের পথ ধরবেন। ফলে ঠিক এক বছর আগের মতো সঙ্কট তৈরি হতে পারে।
মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে কমবেশি লকডাউন চলছে। দিল্লিতেও এক সপ্তাহ লকডাউন। তার আগে থেকেই শপিং মল বন্ধ। আজ খুচরো বিক্রেতা সংস্থাগুলির সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিইও কুমার রাজাগোপালন জানান, পুরোপুরি সব বন্ধ করে দেওয়া কোনও সমাধান নয়। জীবন এবং জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য জরুরি। যাতে জীবন রক্ষা পেলেও জীবিকা না চলে যায়। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের বক্তব্য, “এমনিতেই অর্থনীতির এখনও বেহাল দশা। একমাত্র সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ছাড়া আর কেউ বলছেন না, আগের বছরের তুলনায় অবস্থা ভাল। এখন লকডাউন বা লকডাউনের মতো নিয়ন্ত্রণ হলে পরিস্থিতি আরও
খারাপ হবে।’’
আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল আগামী সোমবার সকাল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করলেও পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি না-ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু দিল্লির আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনাসগুলিতে শনি-রবিবার থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরেও একই ছবি। সে রাজ্যের মন্ত্রী অশোক চহ্বাণের বক্তব্য, পরিস্থিতি এখনও আগের বছরের মতো হয়নি। কারখানা, নির্মাণ ক্ষেত্র চালু।
সূত্রের খবর, অর্থমন্ত্রী এই জায়গাতেই শিল্পপতিদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে কর্মী, বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিকদের বার্তা দিতে চেয়েছেন, দেশ জুড়ে লকডাউন হচ্ছে না। ফলে ট্রেন-বাস বন্ধ হবে না।
শিল্পের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্তরে লকডাউন হলে এক রকম নিয়ম চালু থাকে। কিন্তু স্থানীয় স্তরে হলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম নিয়ম। ফলে সংস্থা বা ব্যবসায়ীদের হয়রানি বাড়ছে।