ফাইল চিত্র।
বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে বসে রবিবারও বণিকসভার শিল্পপতিদের লগ্নির ডাক দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইউপিএ জমানার দিকে ইঙ্গিত করে দাবি করলেন, বিশ্ব মন্দার পরে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তার সদ্ব্যবহার করা হয়নি। শিল্প ও ব্যবসায়ী মহল নিশ্চিত করুক, এ বার যেন তা না হয়। বিশেষত অর্থনীতি যেখানে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং বাজেট ভবিষ্যতে উন্নতির পথ গড়ে দিয়েছে।
তবে শিল্প মহল তাদের প্রশ্নে ও প্রস্তাবে এ দিন বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে বাজেট যতই দীর্ঘ মেয়াদে উন্নতির পথ দেখাক, এই মুহূর্তে অর্থনীতিতে চাহিদা বৃদ্ধির নিশ্চয়তাই পেতে চাইছে তারা। যে কারণে সাধারণ মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে আয়করে ছাড় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উঠে এসেছে বণিকসভা ফিকির সভায়। পরিকাঠামোয় খরচ ঠিক কী ভাবে কোন কোন ক্ষেত্রে চাহিদা এবং কাজ তৈরি করবে, তা জানতে চেয়েছেন কেউ কেউ। এই প্রশ্নও উঠেছে, আগামী ২৫ বছরে উন্নতির দিশা পাওয়া গেলেও, অর্থনীতির আশু উন্নতির পদক্ষেপ কোথায়? ছোট-মাঝারি সংস্থা, পর্যটন, হোটেল-রেস্তরাঁ শিল্পের জন্য দাবি করা হয়েছে পুঁজি জোগাড়ের পথ, ঋণের সহজ শর্ত। অন্য দিকে, বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সদস্যরা কেউ বলেছেন করোনার আঘাতে ধুঁকতে থাকা বিমান শিল্পের জন্য জ্বালানি এটিএফে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় উৎপাদন শুল্ক কমানোর কথা, কেউ কাঁচামালের দামে শুল্ক ছাড় চেয়েছেন, কারও বা আবেদন শুল্ক বাড়িয়ে বিদেশি পণ্যকে আটকে দেওয়া হোক।
ফিকির সভায় এডেলউইজ়-এর চেয়ারম্যান-সিইও রাশেস শাহ বলেন, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে জরুরি চাহিদা বৃদ্ধি। তাই মানুষের হাতে নগদ দিতেই প্রয়োজন ছিল আয়করে ছাড়। অ্যাডভেন্ট প্রাইভেট ইকুইটির চেয়ারম্যান নয়না লাল কিদোয়াই মূলধনী খাতে নির্মলার ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনাকে সাধুবাদ দিলেও, চাহিদা ও কেনাকাটা বৃদ্ধি, কাজ তৈরি, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতিতে কোথায় কত টাকা যাবে তার রূপরেখা জানতে চেয়েছেন। মহীন্দ্রা-র এমডি অনীশ শাহ বলেন, ২০২০-২১ সালের বাজেটে প্রস্তাবিত পরিকাঠামো খরচের ৫০% বাস্তবায়িত হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষেও লক্ষ্য পূরণ দূরে। ফলে আগামী বছর পুরোটা খরচ হবে, তার নিশ্চয়তা কী!
বাজেটে খরচের পরিকল্পনা বাস্তবে পুরোপুরি রূপায়ণ না-হওয়ার কথা অবশ্য পুরোটা মানেননি নির্মলা। বলেছেন, চলতি অর্থবর্ষে ৫.৫৪ লক্ষ কোটি টাকা খরচের যে প্রস্তাব ছিল, তার অনেকটাই সম্পন্ন। তাঁর দাবি, রাজস্ব খাতে আয় বাড়বে। তাই ভবিষ্যতেও প্রস্তাবিত খরচের পুরোটা বাস্তবায়িত হবে। তবে নিজেকে মধ্যবিত্তদের দলে শামিল করে আয়কর ছাড়ের প্রসঙ্গ এড়িয়েছেন তিনি।
অ্যাসোচ্যামের সভায় বিমান জ্বালানি এটিএফে উৎপাদন শুল্ক ও আর্থিক সাহায্যের আর্জি জানান স্পাইসজেটের সিএমডি অজয় সিংহ। শুল্ক প্রসঙ্গে চুপ থাকলেও, নির্মলা পরে আশ্বাস দিয়েছেন জিএসটি কাউন্সিলের পরের বৈঠকে এটিএফে জিএসটি বসানোর প্রস্তাব দেবেন।