মৃদু মূল্যবৃদ্ধি। আর টগবগে শিল্প। অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরাতে যে জোড়া শর্তপূরণ জরুরি, সোমবার যেন ঠিক সেই আদর্শ ছবিই তুলে ধরল কেন্দ্রের পরিসংখ্যান। দেখা গেল, জানুয়ারিতে শিল্পোৎপাদন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৭.৫%। সেই সঙ্গে চার মাসে সব থেকে নীচে নেমে গিয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। ফেব্রুয়ারিতে দাঁড়িয়েছে ৪.৪৪%। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শিল্পের এই ভাল পরিসংখ্যান আগের বছরের জানুয়ারির ভিত্তিতে। যখন নোটবন্দির গেরোয় নাকাল ছিল কল-কারখানা। তাই একে শিল্পের হাল ফেরা বলার আগে আর একটু সময় নিতে চান তাঁরা।
এই জানুয়ারিতে শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ৭.৫%। যা আগের বছরের জানুয়ারির (৩.৫%) তুলনায় অনেকটা বেশি। এই সময়ে কল-কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে চমকে দেওয়া হারে (৮.৭%)। আগের বছর এই সময়ে যা ছিল ২.৭%!
মূলধনী পণ্য সাধারণত ব্যবহার হয় অন্য পণ্যের উৎপাদনে। তাই আগামী দিনে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কেমন হবে, তার আঁচ মেলে এর উৎপাদন-পরিসংখ্যানে। এ বার তা বেড়েছে ১৪.৬%। চোখে পড়ার মতো উন্নতি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের উপযোগী ভোগ্যপণ্যেও (৮%)। গত বছর জানুয়ারিতে যা সরাসরি কমে গিয়েছিল ২%। তার উপর এই নিয়ে টানা ৩ মাস শিল্প সূচক বাড়ছে দ্রুত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খটকা এখানেই। কারণ, ঠিক নভেম্বর থেকেই লাফিয়ে বেড়েছে শিল্প বৃদ্ধির হার। ২০১৬ সালে ঠিক যে মাসের শুরুতে নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বৃদ্ধির এই হিসেব যেহেতু আগের বারের একই মাসের তুলনায় করা হয়, তাই সেই ভিত যে এ বার নড়বড়ে, তা মাথায় রাখা জরুরি। তবে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নীচে নেমে আসা অবশ্যই কিছুটা স্বস্তি জোগাবে কেন্দ্রকে। বিশেষত খাদ্যদ্রব্যের দাম কম গতিতে বাড়ায় খুশি হবে মোদী সরকার। কিন্তু এই পরিসংখ্যানও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর পক্ষে যথেষ্ট কি? শিল্পের কাছে এখন লাখ টাকার প্রশ্ন সেটিই।