—প্রতীকী ছবি।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সহনসীমার মধ্যে ফের এল দেশের খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার। নামল ৬ শতাংশের নীচে। বুধবার জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (এনএসও) জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে তা ছিল ৫.০২%। তিন মাসের সর্বনিম্ন। মূলত আনাজ ও জ্বালানির দাম মাথা নামানোয় মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিক ভাবে কমেছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রকে স্বস্তি দিয়েছে শিল্প বৃদ্ধির হারও। যা অগস্টে ছিল ১০.৩%। ১৪ মাসের সর্বোচ্চ।
এই পরিস্থিতিতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মাথা তুলেছে আশা-আশঙ্কার বিভিন্ন সম্ভাবনা। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, শীতে বাজারে নতুন আনাজ এলে কি খাদ্যপণ্যের দাম আরও কমে মূল্যবৃদ্ধি ফের মাথা নামাবে? রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমিয়ে কি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির সামনেও শিল্প ও বাড়ি-গাড়ির ক্রেতাদের স্বস্তি দেওয়ার রাস্তা খুলে দেবে? অন্য একটি অংশ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম নতুন করে মাথা তুলেছে। এরই মধ্যে ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিম এশিয়া। সে ক্ষেত্রে তেলের দাম আরও বাড়লে মূল্যবৃদ্ধির হার ফের মাথা তুলবে কি না, সেই প্রশ্নেও দূর হচ্ছে না উদ্বেগ। গ্রামাঞ্চলে (৫.৩৩%) মূল্যবৃদ্ধির হার এখনও শহরের (৪.৬৫%) চেয়ে অনেকটা বেশি। দুশ্চিন্তা রয়েছে তা নিয়েও।
আইআইটি পটনার অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির স্বস্তির বৃত্তে ফেরার পিছনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পদক্ষেপ। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা তেলের দামে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। আর তেলের দাম বাড়লে জিনিসপত্রের দামের উপরেও তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।’’ আর আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলছেন, ‘‘আগামী অন্তত দু’টি ত্রৈমাসিকে সুদ কমার সম্ভাবনা নেই। লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত আগ্রাসী ভাবেই মূল্যবৃদ্ধিকে আরও কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।’’
গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অগস্টের ৯.৯৪% থেকে ৬.৫৬ শতাংশে নেমেছে। খাদ্য ও জ্বালানি বাদে বাকি জিনিসের ক্ষেত্রে হার ৪.৭%। যা কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর। শেষ বর্ষায় বৃষ্টির ঘাটতি অনেকটা পুষিয়ে যাওয়ায় নতুন ফসল বাজারে এলে খাবারদাবারের দাম আরও কমে কি না, সে দিকেই এখন চোখ আমজনতার। অগস্টে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৬.৮৩%। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৭.৪১%। অন্য দিকে, ২০২২ সালের অগস্টে শিল্পোৎপাদন ০.৭% সঙ্কুচিত হয়েছিল। সেই নিচু ভিতের নিরিখেই গত অগস্টে তা অনেকটা লাফিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, এই পরিসংখ্যানও সরকারের কাছে স্বস্তির। বিশেষ করে যখন উৎপাদন ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৯.৩%।