Retail Inflation

মূল্যবৃদ্ধি ন’মাসে সর্বোচ্চ, বাধা সুদ কমানোর রাস্তায়

কেজি প্রতি আলু ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা, টোম্যাটো ১০০ টাকা, বেগুন ১৫০ টাকার আশেপাশে। একটি ফুলকপি কিনতে বেরিয়ে যাচ্ছে ৭০ টাকা, কিছু কিছু বাজারে ৯০ টাকা পর্যন্ত উঠছে দর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০০
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

গত বুধবার ঋণনীতি ঘোষণার পরে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি বড় লাফ দিতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।

Advertisement

কেজি প্রতি আলু ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা, টোম্যাটো ১০০ টাকা, বেগুন ১৫০ টাকার আশেপাশে। একটি ফুলকপি কিনতে বেরিয়ে যাচ্ছে ৭০ টাকা, কিছু কিছু বাজারে ৯০ টাকা পর্যন্ত উঠছে দর। রোজকারের রান্নার জন্য অপরিহার্য খাদ্যপণ্যগুলির আগুন দামের জেরে খরচ এড়ানোর কোনও উপায় থাকছে না, দাবি সাধারণ মানুষের। ফলে সারা দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার যে চড়তে পারে, তা বোঝাই যাচ্ছিল। সোমবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানাল, ওই হার ফের পৌঁছেছে ৫.৪৯ শতাংশে। ন’মাসে সব থেকে বেশি। শুধু খাদ্যপণ্যেই তা ৯.২৪%। তার মধ্যে আনাজের মূল্যবৃদ্ধি ৩৫.৯৯%, ডালের ৯.৮১% এবং ফলের ৭.৬৫%। এ দিনই পাইকারি বাজারের হিসাব জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক। মূলত খাবারের দাম বৃদ্ধির জেরে সেটিও ১.৩১% থেকে পৌঁছেছে ১.৮৪ শতাংশে। সেখানে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১১.৫৩%। আনাজের ৪৮.৭৩%। আলু ও পেঁয়াজের যথাক্রমে ৭৮.১৩% এবং ৭৮.৮২%। যার প্রভাব আগামী কয়েক মাস খুচরো বাজারে থাকতে পারে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কীসের উপরে ভিত্তি করে পরিবারের বাজেট তৈরি করবেন মধ্যবিত্ত ও দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ? এই অবস্থায় চড়া সুদ থেকে ঋণগ্রহীতাদের সুরাহা দেওয়াও সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন সকলে।

খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। একে ‘আর্থিক ট্র্যাজিডি’ হিসেবে বর্ণনা করে দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের বক্তব্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের দাম বাড়লে দীর্ঘ মেয়াদে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উপরে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ দিনই তেলের চড়া দামের বিরুদ্ধে পুণেতে বিরোধী দলটির সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষ হয়েছে।

Advertisement

অথচ জুলাই ও অগস্টে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বাঁধা ৪% লক্ষ্যমাত্রার নীচে থাকার পরে শিল্প মহল থেকে দাবি উঠেছিল, শীর্ষ ব্যাঙ্ক এ বার সুদ কমানোর কথা ভাবুক। পুঁজি সংগ্রহের খরচ কমিয়ে জ্বালানি জোগাক আর্থিক বৃদ্ধির চাকায়। বাড়ি-গাড়ি কিনতে উৎসাহ দিক সাধারণ মানুষকে। তবে বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, শুধু যে খুচরো বাজারের দাম চড়ছে এমন নয়, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পাইকারি দরও। সেই দামের প্রভাব খুচরো বাজারে পড়তে বেশ কয়েক দিন লাগে। এরই মধ্যে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বেড়েছে। যা দেশেও জ্বালানিকে ঝুঁকির মধ্যে রাখছে। ফলে আগামী ক’মাস মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যানে কতটা উন্নতি হয়, সে বিষয়ে সন্দেহ থাকছে। সব মিলিয়ে এ দিনের পরিসংখ্যানের পরে অদূর ভবিষ্যতে সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা কার্যত থাকল না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

এ দিন কেন্দ্রের দাবি, গত বছরের প্রতিকূল ভিতের নিরিখে হিসাব কষায় ও প্রতিকূল আবহাওয়ার ফলে মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলেছে। তবে সাধারণ মানুষের বড় অংশের বক্তব্য, বাজারের অবস্থা যে পরিসংখ্যানের চেয়েও ভয়াবহ, তা খাদ্যপণ্য ও আনাজের দামে স্পষ্ট। সরকারি তথ্যই বলছে, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৯.২৪ শতাংশে পৌঁছেছে। যা অগস্টে ছিল ৫.৬৬%। গত বছর সেপ্টেম্বরে দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৫.০২%। জুলাই ও অগস্টে যথাক্রমে ৩.৬% ও ৩.৬৫%।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement