—প্রতীকী ছবি।
এ মাসের প্রথম দিন থেকে নজির গড়ছে শেয়ার বাজার। ওই দিন ২০,২৬৮ অঙ্কে পৌঁছে সর্বোচ্চ শিখরে পা রেখেছিল নিফ্টি। পরের সপ্তাহের পাঁচ দিনের মধ্যে চার দিনই সেনসেক্স এবং নিফ্টি নতুন নজির গড়ে, যখন জানা যায় হিন্দি বলয়ের তিনটি রাজ্যে বিজেপি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক ভাল ফল করে সরকার গড়তে চলেছে। বাজারের ঊর্ধ্বমুখী দৌড় আরও গতি পেয়েছে গত সপ্তাহে। যার কারণ, আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদ অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত। তারা আগামী বছর সুদ কমানোর ইঙ্গিতও দিয়েছে। এই খবরে লাগামছাড়া হয়ে ওঠে ভারতের দুই সূচক। গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার আবার তৈরি হয় নজির।
গত বৃহস্পতিবারই সেনসেক্স প্রথম বার ঢুকে পড়ে ৭০ হাজারের ঘরে। ২১ হাজারে প্রবেশ করে নিফ্টি। সপ্তাহের শেষ দু’দিনে সেনসেক্স যথাক্রমে ৯৩০ এবং ৯৭০ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছেছে ৭১,৪৮৪ অঙ্কে।
দিওয়ালির সন্ধ্যায় (১২ নভেম্বর) সেনসেক্স ৩৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ছুঁয়েছিল ৬৫,২৫৯। মাত্র দু’মাসে ৬২২৫ এগিয়ে পেরোল ৭১ হাজার। কম সময়ে এমন বিরাট উত্থান অনেক ক্ষেত্রে পতন ডেকে আনে। তবে দেশের সুঠাম অর্থনীতি এবং বিদেশি লগ্নি পতনকে গভীর হতে দেবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। নভেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলার (৫.৫৫%) খবরেও মুষড়ে পড়েনি বাজার। অবশ্য অক্টোবরের শিল্প বৃদ্ধি ১৬ মাসে সর্বোচ্চ, ১১.৭%।
আমেরিকার সুদ কমানোর ইঙ্গিত ভারতেও সুদের হার কমার আশাকে উস্কে দিয়েছে। ফলে বাড়ছে বন্ডের দাম। পড়ছে তার ইল্ড। ১০ বছর মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রের ইল্ড ৭.২৫% থেকে শুক্রবার নেমেছে ৭.১৬ শতাংশে। এতে লাভবান হবেন বন্ড ফান্ড এবং ব্যালান্সড ফান্ডের লগ্নিকারীরা। অন্য দিকে, সূচকের রেকর্ড আশাতীত লাভ তুলে দিয়েছে শেয়ার ভিত্তিক (একুইটি) ফান্ডে লগ্নিকারীদের হাতে। যা অনেককেই প্রলুব্ধ করছে স্থির আয় প্রকল্প থেকে কিছু লগ্নি ফান্ডের জগতে সরিয়ে আনতে। দ্রুত বাড়ছে এসআইপি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এবং লগ্নির পরিমাণ।
অনেকের আশা, মার্চের পরে ভারতেও সুদ কমতে পারে। তাতে বাড়ি, গাড়ি, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন শিল্প উপকৃত হবে। শেয়ার বাজার আরও উঠবে। অনেকে সেনসেক্সের এক লাখে পৌঁছনোর স্বপ্নও দেখছেন। তবে লোকসভা ভোট ঘিরে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। খাদ্যপণ্যের চড়া দামও আশঙ্কার। যা খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুললে সুদ কমার সম্ভাবনা পিছোবে। যদিও অর্থনীতি বৃদ্ধির মাত্রা ধরে রাখলে ছোট মেয়াদে ওঠাপড়া সত্ত্বেও বড় মেয়াদে তির উপরেই থাকবে। আরবিআই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৫% থেকে বাড়িয়ে ৭% করেছে। এডিবি-র বর্ধিত অনুমান ৬.৭%।
(মতামত ব্যক্তিগত)