লাল রাজধানী আর বেশি দিন নয়। ফাইল চিত্র
রাজধানী এক্সপ্রেস। ভারতীয় রেলের প্রথম দুরন্ত গতির ট্রেন। যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৯ সালে। প্রথম চালু হয় কলকাতা রাজধানী। হাওড়া থেকে দিল্লি যাওয়ার দ্রুতগামী ট্রেন। এর আগে হাওড়া থেকে দিল্লি যেতে ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগত। সেই প্রথম ১৮ ঘণ্টায় দিল্লি-হাওড়া ট্রেন চলাচল শুরু। এর পরে ট্রেনের গতি বৃদ্ধি এবং সফরের সময় কমতে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে দেশে রাজধানী এক্সপ্রেসের সংখ্যা। বিভিন্ন রাজ্য থেকে রাজধানী দিল্লি যাওয়ার ট্রেন চলাচল শুরু হয় দেশের দক্ষিণ, পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব থেকে।
এখন দেশে ২৪ জোড়া রাজধানী এক্সপ্রেস চলে। এই ট্রেনের গতি এবং ভাড়া যেহেতু বেশি, তাই প্রথম থেকেই উন্নত মানের আরামদায়ক বগি দিয়েই চলে রাজধানী এক্সপ্রেস। এর আগে ভারতে দূরপাল্লার ট্রেনে মূলত থাকত চেন্নাইয়ের ইন্টেগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি বগি। কিন্তু রাজধানীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি লিঙ্কে-হফম্যানে বুশ (এলএইচবি) বগি। এই বগি এমন ভাবে তৈরি হয়, যাতে তা ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে চলতে পারে।
এ বার আরও উন্নত বগি পেতে চলেছে রাজধানী। এখন রাজধানীর থেকেও উন্নত এলএইচবি বগি ব্যবহার করা তেজস এক্সপ্রেস চালাতে। এ বার রাজধানীতেও সেই উন্নত এলএইচবি বগি ব্যবহার শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই মুম্বই-দিল্লি রাজধানী দিয়ে সেই যাত্রা শুরু হয়েছে। এখন চারটি রাজধানী এক্সপ্রেস চলছে তেজসের বগি দিয়ে। মুম্বই থেকে নয়াদিল্লি, মুম্বই থেকে হজরত নিজামুদ্দিন (দিল্লি), রাজেন্দ্র নগর (পটনা) থেকে নয়াদিল্লি এবং আগরতলা থেকে আনন্দ বিহার (দিল্লি) রাজধানী এক্সপ্রেস এখন তেজসের বগি দিয়ে চলছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দিনে দেশে চলা ১২টি রাজধানীতেই তেজসের বগি ব্যবহার করা হবে।
তেজসের বগি দিয়েই চলছে মুম্বই-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস। ফাইল চিত্র
প্রসঙ্গত ভারতে এখন সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন তেজস এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে যে বগি ব্যবহার করা হয়, তা ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে চলতে পারে। এখন রাজধানী এক্সপ্রেসেও সেই বগি ব্যবহার করার ফলে এই ট্রেনের গতিও কিছু দিনের মধ্যেই বাড়ানো হতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়বে যাত্রী সাচ্ছন্দ্য। কারণ, তেজসে ব্যবহার করা বগিতে অটোমেটিক দরজা থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা, ফায়ার অ্যালার্ম থেকে আলো— সবতেই রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এই বগিতে শৌচাগারেও রয়েছে বায়ো ভ্যাকুয়াম পদ্ধতি। আরও একটি আকর্ষণ এই বগির জানালা। অনেকটা বড় জানালা দিয়ে ট্রেনের বাইরের দৃশ্য দেখার সুযোগ পান যাত্রীরা।